কুমিল্লা ব্যুরো:
পরিবারের নিয়ন্ত্রন নিতে ব্যার্থ হয়ে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকেই হত্যা করা হয়েছে শুশুর ও শাশুরিকে এমন কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন নিহতদের পুত্রবধু শিউলি আক্তার। পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। এ হত্যা কান্ডে সহযোগিতা করেন শিউলী আক্তারের খালাতো ভাই জহিরুল ইসলাম সানি ও সানির বন্ধু তুহিন। হত্যার পর সহযোগিদের বিদায় করে গৃহবধু শিউলি ডাকাত ডাকাত চিৎকার করে ডাকাতির নাটক সাজায়।
মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মোঃ আবদুর রহিম এ কথা বলেন।
সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, রোববার রাতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সুবর্নপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক বিল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী সফুরা বেগমকে শ^াসরোধ করে হত্যার ঘটনায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের সাথে জরিত পুত্রবধু শিউলিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার দিন রাত আটটায় শিউলি কুমিল্লা শহরে থাকা তার খালাতো ভাই সানিকে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে আসতে বলে। পরে সানি তার বন্ধু তুহিনকে নিয়ে আসে। রাত নয়টায় তারা ওই বাড়িতে গেলে শিউলি তাদের তাদের একটি ঘরে রাখে। কিছুক্ষন পরে শিউলি ওড়না দিয়ে তার শাশুরি সফুরা বেগমকে মুখ চেয়ে ধরে বাকি দুজন হাত পা বেঁধে ফেলে। পরে শিউলি বিছানার কম্বল চাপা দিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। এর কিছক্ষন পর শুশুর বিল্লাল হোসেন বাহিরে থেকে ঘরে আসলে একই কায়দায় তাকেও হত্যা করা হয়। হত্যার পর ঘটনাটি ডাকাতি সাজানোর জন্য ঘরের আসবাবপত্র ও বিছানো এলামেলো করে মেঝেতে ফেলে রাখে। নিহতদের মোবাইল ফোনটি পাশের ডোবায় ফেলে যায়।
গ্রেফতার হওয়া নাজমুন নাহার চৌধুরী শিউলি দুবাই প্রবাসী আমান উল্লাহর স্ত্রী ও সদর উপজেলার আনন্দপুরের মোর্শেদ চৌধুরীর কন্যা ।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আফজাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার, রাজন কুমার দাস, ডিআইও ওয়ান মনির আহমেদ, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যজিৎ বড়ুয়া, পুলিশ উপ-পরিদর্শক পরিমল চন্দ্র দাসসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এঘটনায় নিহত বিল্লাল হোসেনের বড় মেয়ে বিলকিছ আক্তার বাদী হয়ে নাজমুন নাহার চৌধুরী শিউলি ও দুজন অজ্ঞাতনামা আসামী করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ আটক বিল্লাল হোসেনের পুত্রবধু নাজমুন নাহার চৌধুরী শিউলিকে (২৫) জিজ্ঞাসাবাদে সে অপর সহযোগিদের নাম বলে। পরে আসামী গ্রেফতারে অভিযানে ছিলেন, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যজিৎ বড়ুয়া ও উপ-পুলিশ পরির্দক পরিমল চন্দ্র দাস অভিযান চালিয়ে নগরীর চর্থা এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম মজুমদার সানি (১৯)ও লালমাই থানার জয়কামতা এলাকার মেহেদী হাসান তুহিনকে (১৮) বরুড়ার আড্ডা বাজার থেকে গ্রেফতার করে।