ইকরামুল হাসান-
প্রতিটি ক্লিক এক একটি গল্প বলে, এই প্রতিপাদ্যের আলোকে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ এবং জেআরএন ভিজুয়ালসের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো আলোকচিত্র প্রদর্শনী “ আনটোল্ড”।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের ফুল চত্বরে সকলের জন্য উন্মুক্ত প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ জিয়াউল হাসান প্রদর্শনীটির উদ্বোধন ঘোষণার মাধ্যমে আয়োজনটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন,কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী আব্দুল মান্নান,রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল মতিন, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন মামুন, সহকারী অধ্যাপক সামিয়া আসাদী, সহকারী অধ্যাপক তানিয়া সুলতানা , সহকারী অধ্যাপক শবনম জান্নাত, , প্রভাষক সোহেল হোসেন,প্রভাষক ফারিশতা সিদ্দিকী, প্রভাষক ফারিয়া জাহান এবং স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের উপদেষ্টা তামান্না জেরিন।
উল্লেখ্য, প্রদর্শনীটি সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৮২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের চলমান ফটোজার্নালিজম কোর্সের অংশ হিসেবে কোর্স পরিচালক প্রভাষক সোহেল হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং জেআরেন ভিজুয়ালসের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ ফ্রেমে বন্দিকৃত ছবিগুলো প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের সৃজনশীলতা তুলে ধরেন।
আয়োজনটিতে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব প্রয়াসে তৈরিকৃত বায়স্কোপের উপস্থিতি আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।

প্রদর্শনীটির নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে ছিলেন উক্ত বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও কারকের হেড অফ ক্রিয়েটিভ ডিপার্টমেন্ট রিফাত হাসান দীপ্র এবং একই বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সময় টিভির জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রতিবেদক আল-আমিন তুষার ।

নির্বাচকবৃন্দ প্রদর্শিত সকল ছবি হতে চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এবারের আয়জন“ আনটোল্ডের” ৩ জন সেরা আলোকচিত্রীকে বেঁছে নেন। এদের মাঝে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৮২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহজাদ রেজা প্রথম স্থান অর্জন করেন। পাশাপাশি, বিভাগটির ৮৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাফায়েত হোসেন শান্ত ২য় স্থান এবং যৌথভাবে একই বিভাগের ৭৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইন্দ্রাণী মল্লিক ও ৮৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসফিয়া আখতার ৩য় স্থান অর্জন করেন।

আয়োজন প্রসঙ্গে প্রদর্শনীটির তত্ত্বাবধায়ক এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক সোহেল হোসেন তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, ফটোজার্নালিজম কোর্সের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবেই আমরা এই এক্সিবিশন করেছি, যাতে শিক্ষার্থীরা বাস্তবে ছবি তুলে গল্প বলার অভিজ্ঞতা পায়। গার্ডেনে ওপেন-এয়ার সেটআপে তারা খুব সুন্দরভাবে কাজগুলো সাজিয়েছে। তাদের সৃজনশীলতা ও পরিশ্রম দেখে আমি খুবই সন্তুষ্ট। এই অভিজ্ঞতা তাদের ভবিষ্যতের ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিংয়ে অনেক কাজে লাগবে।

আয়োজক ব্যাচের (৮২ তম) পক্ষে শিক্ষার্থী তুহিব্বুল আসাদ আবীর জানান, উল্লিখিত কোর্স কার্যক্রমের পাশাপাশি আমাদের উদ্দেশ্য ছিল JRN Visuals Club-কে আবার সক্রিয় করা। অনেক দিন ধরে ক্লাবটি কার্যক্রমহীন ছিল, আর আমরা চেয়েছিলাম যেন সেটি আবার নিজের গতিতে ফিরুক। এখন মনে হচ্ছে আমরা সেই পথে ভালোভাবে শুরু করতে পেরেছি।
স্যার, ম্যাম আর শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রম সত্যিই মূল্য পেয়েছে। তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো সবার প্রাণবন্ত উপস্থিতি, যা পুরো আয়োজনটিকে জমিয়ে তুলেছিল।
আবির আরও জানান, এটি ছিল আমাদের সবার যৌথ প্রচেষ্টা। আশা করি আমাদের জুনিয়ররা এখান থেকে কাজটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
আয়োজকদের পক্ষ হতে আরেকজন শিক্ষার্থী নাঈমা জাহান লামিয়া তার অনুভূতি প্রকাশ করেন বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের শিক্ষক সোহেল স্যার কে আমাদের এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য । প্রথমবার এত বড় দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা একটু ভয়ে ছিলাম ঠিক মতন সব কিছু হবে কিনা ।তারপর হঠাৎ ভূমিকম্প,ভার্সিটি সাময়িক বন্ধের ঘোষণার সম্ভাবনা এই সব নিয়ে আমরা ভয়ে ছিলাম যে শেষ মুহূর্তে সব আয়োজন বন্ধ না হয়ে যায় ।তারপরও আমরা একসাথে কাজ করে সিনিয়রদের সহায়তায় নিজেদের ১০০% দেওয়ার চেষ্টা করেছি । এই আয়োজনে আমাদের ব্যাচের সবাই একজোট হয়ে কাজ করেছি তাদের মধ্যে তুহিব্বুল আসাদ আবীর ও মেহজাদ রেজা, এদের ছাড়া এই আয়োজন এত সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব ছিলো না।
বিভাগটির বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত সকলেই উক্ত আয়োজনটির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং সুদূর ভবিষ্যতেও যেন এরকম আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
