ইকরামুল হাসান-
শিক্ষার্থীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মজীবনের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ এবং নেটকম লার্নিং বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ‘ডিজিটাল সাংবাদিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শীর্ষক কর্মশালা ’অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে উক্ত কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত কর্মশালাটির প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন নেটকম লার্নিং বাংলাদেশের মেন্টর ও ভয়েস অফ আমেরিকার সাংবাদিক অমৃত মলঙ্গী এবং নেটকম লার্নিং-এর আরেকজন মেন্টর মোঃ তানভির খান।

কর্মশালাটির সূচনা লগ্নে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামিয়া আসাদী এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মোশাররফ হোসেনের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
পরবর্তীতে ২ জন প্রশিক্ষক আধুনিকতার এই যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যথোপযোগী ব্যবহার এর উপকারিতা-অপকারিতা, মূল্যায়ন এবং তথ্য সরবরাহ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে নানাবিধ নিয়মাবলীগুলো শুনিপুনভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষকদের নিকট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তাদের শঙ্কা ও জানার বিষয়গুলো তুলে ধরেন। প্রশিক্ষকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের প্রশ্নগুলো বাস্তব উদাহরণ ও অভিজ্ঞতার আলোকে তা সমাধান করেন।
কর্মশালাটির শেষে নেটকম লার্নিং বাংলাদেশের মেন্টর এবং আজকের প্রশিক্ষক অমৃত মলঙ্গী জানান, “বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা মেশিন ইন্টেলিজেন্স সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, মিডিয়াও এর ব্যতিক্রম নয়। সাংবাদিকতায় এর ব্যবহার ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হবে।
তবে একজন সাংবাদিক বা রিপোর্টার কীভাবে এ প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারেন—তা জানা ও শেখা জরুরি। শুধু অনলাইনে দেখা নয়, বরং নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই তা শেখা সম্ভব।
আজ স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও নেটকম লার্নিং যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ সুযোগ। বিশেষ করে যারা এখনো পেশাজীবনে প্রবেশ করেনি, তাদের জন্য এটি ভবিষ্যতে অনেক উপকারে আসবে বলে আমি মনে করি।”
এ ছাড়াও কর্মশালাটি সম্পর্কে সাংবাদিকতা বিভাগটির প্রভাষক সোহেল হোসেন তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, “আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বাস করছি, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটি বড় প্রযুক্তিগত অবদান। অনেকে মনে করেন ভবিষ্যতে এআই মানুষের চাকরি কেড়ে নেবে—কিন্তু বাস্তবে বিষয়টি তেমন নয়। বরং যারা এআই–এ দক্ষ, তারাই মানুষের কাজগুলো গ্রহণ করবে।
অর্থাৎ, ভবিষ্যতে এআই আমাদের কাজের ধরন পরিবর্তন করবে, হয়তো কাজ কমাবে না—বরং কাজের ক্ষেত্রকে আরও সম্প্রসারিত করবে। তাই সাংবাদিক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের এখন থেকেই এআই–এর ওপর কাজ করা ও তা শেখা জরুরি।
আজকের সেশনে আমরা বুঝতে পেরেছি, আমরা অনেক সময় এআই–কে ভুলভাবে ব্যবহার করি। তাই সঠিকভাবে এআই ব্যবহার করতে হলে আগে সেটিকে সঠিকভাবে ‘ট্রেইন’ করা প্রয়োজন।”
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকৃত শিক্ষার্থীরা জানান, রিয়েলটাইম জার্নালিজমের এই চরম সময়ে দাড়িয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাঠামোগত এবং বাস্তবভিত্তিক আলোচনা আমাদের জন্য ছিল একটি বড় পাওয়া যা আমাদের জ্ঞানের পরিধিকে আরও বিকশিত করবে এবং এআই নিয়ে আরও বিস্তরভাবে জানা ও উপযুক্তভাবে স্থান ,কাল, পাত্রভেদে প্রয়োগ করার দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।
উক্ত আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানিয়া সুলতানা, সহকারী অধ্যাপক শবনম জান্নাত, প্রভাষক সোহেল হোসেন এবং প্রভাষক ফারিয়া জাহান এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
