সোহেল রানা
ঢাকার সাভারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সাজ্জাদ হোসেন (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছে।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত ১১ টার দিকে সাভার পৌরসভার বক্তারপুর কোটবাড়ি- আরাপাড়া বালির মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তাকে উদ্ধার করে বন্ধু ও স্থানীয় লোকজন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সাজ্জাদ হোসেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজার ছাতা মসজিদ এলাকার শাহীন ওরফে নুরা মিয়ার ছেলে। তিনি পৌরসভার আরাপাড়া এলাকার কফিল উদ্দিনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে সাভার উপজেলার হেমায়েতপুর এলাকায় একটি ফার্নিচারের দোকানে রংমিস্ত্রির কাজ করতেন।
জানা গেছে, নিহত সাজ্জাদ রাজাশন এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া রফিকুল ইসলামের মেয়ে ফাতেমা আক্তারকে (২১) ছয় বছর আগে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে সিদরাতুল মুনতাহা সাফা (৫) নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নিহতের শ্বশুরবাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার অলিপুর গ্রামে।
পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর সঙ্গ ত্যাগ করে ২ বছর যাবত পূর্ব পরিচিত বড় ভাই ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বাপ্পী মিয়ার আশ্রয়ে ওই ভাড়া বাসায় আলাদা থাকতেন তিনি। নিহত সাজ্জাদ কাজের পাশাপাশি বাপ্পী মিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রেদোয়ান মোল্লার অনুসারী হিসেবে নিয়মিত রাজনৈতিক প্রোগ্রামে অংশ নিতেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা ও সাজ্জাদকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বাপ্পি মিয়া বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে সাভার পৌরসভার বক্তারপুর কোটবাড়ি-আরাপাড়া বালির মাঠ এলাকায় আমাদের পূর্ব পরিচিত জুয়েল, মাসুম, আলামিন, সাজ্জাদসহ কয়েকজন আড্ডা দিচ্ছিল। ওই সময় তাদের পাশ দিয়ে রিক্সাযোগে যাওয়ার পথে জালাল বাবুর্চির ছেলে আলামিন (২৫) ও রাব্বি ওরফে মুরগি রাব্বি (২২) তাদের দেখে জিজ্ঞেস করে তোরা কারা.? এ কথা বলার পর রিকশায় থাকা আলামিন ও রাব্বিকে নামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে চর-থাপ্পড় মারা হয়।
এ সময় ওই দুজনের কাছে একটি ছুরি পাওয়া গেলে সাজ্জাদ সঙ্গীয়দের কাছে ক্ষমা চেয়ে আলামিন ও রাব্বি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এর দেড় ঘন্টা পর ওই এলাকার সারোয়ার ভান্ডারীর ছেলে স্বপনের (৩৫) নেতৃত্বে পুনরায় আলামিন ও রাব্বিসহ আরো ৬/৭ জন ঘটনাস্থলে আসে। এরপর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজ্জাদকে ছুরিকাঘাত করে তারা সবাই পালিয়ে যায়। পরে দ্রুত উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর সাভার মডেল থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
নিহতের খালু নজরুল ইসলাম জানান, সাজ্জাদ কাঠের দোকানে রংমিস্ত্রির কাজ করতো। তার বন্ধুদের মাধ্যমে খবর পাই, বক্তারপুর কোটবাড়ি-আরাপাড়া বালির মাঠে কে বা কারা তাকে ছুরি মেরেছে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সে মারা যায়। এ ঘটনা শোনার পর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।’
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহ্জামান পিপিএম বলেন, খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বা বু ম/ সুমন রায়