পুলিশের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করে মাত্র ২৪ ঘন্টা না পেরুতেই এবার রহস্যজনক কারণে ইউটার্ণ নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বহুল আলোচিত সেই ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার বাদী শিল্পী আক্তার। তিনি (শিল্পী) সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে অপহরণকারীদের হুমকীতে সাংবাদিকদের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে জোরপূর্বকভাবে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে বহুল আলোচিত ওই ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার বাদী শিল্পী আক্তার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,’আমি মামলা করতে চাইনা, পুলিশই জোর করে আমাকে মামলা করতে বাধ্য করেছে, এগুলো আসলে তাদের (অপহরণকারীগণ) শিখানো কথা ছিলো। আমি ওইসময় এসব কথা সাংবাদিকদের না বললে, আমাকে ওরা মেরে ফেলত। তাই তখন সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলতে বাধ্য হয়েছি।
আমি আসলে নিজের ইচ্ছাতেই মামলা করেছি।” শিল্পী আক্তার আরও বলেন, মূলত: আমার মেয়েকে অপহরণকারীর বড় ভাই স্থানীয় সাংবাদিক বর্ষণ বাবুল ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে দিয়ে আগের কথাগুলো সাংবাদিকদের কাছে বলাতে বাধ্য করেছিল। কথাগুলো আমার নিজের কথা ছিলনা।’ মাত্র ২৪ ঘন্টা পার না হতেই বাদীর এই আকস্মিক রহস্যজনক সংবাদ সম্মেলন নিয়ে এখন এলাকায় নানা মুখরোচক আলোচনা চলছে।
তবে এ বিষয়ে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার একমাত্র আসামি রিয়াদুল ইসলাম শান্তর বড় ভাই স্থানীয় সাংবাদিক বর্ষণ ফারহান বাবুল বলেন,”ভয় ভীতি আমি নই, মূলত: পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি গ্রুপ ওই নারীকে দেখিয়েছেন। যার ফলে মাত্র ২৪ ঘন্টা নাযেতেই পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেট গ্রুপ যৌথভাবে মিলে সংবাদ সম্মেলনের নামে নতুন এই হাস্যকর নাটক সাজিয়েছে।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে এসব ষড়যন্ত্র বিনষ্ট হয়ে যাবে।” ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমানের কাছে সোমবার সকালে বিষয়টির একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে সাংবাদিক বর্ষণ একটি আবেদন করেছেন বলেও জানান। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।
উল্লেখ যে, মামলা করতে রাজী না হওয়ার পরও, পুলিশের এস আই নজরুল ইসলাম বাদীর কাছ থেকে জোরপূূর্বকভাবে স্বাক্ষর নিয়ে অপহরণকারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা করতে বাদীকে বাধ্য করেছিলেন বলে গতকাল সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন বাদী শিল্পী আক্তার। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় “মিথ্যা মামলায় ফঁাসালেন এস আই” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরই এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই তড়িগড়ি করে বাদীকে দিয়ে সোমবার এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।