নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসির ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৮৭৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত ৭ নভেম্বর রাতে সংঘর্ষের পর শনিবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে বোয়ালমারী থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়। দুটি মামলায় মোট ২২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও প্রায় ৬৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের দায়ের করা মামলায় খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসিরপন্থী পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় ২২ নম্বর আসামি হয়েছেন শেখর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ। তিনি বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। বর্তমানে বিএনপির কোনো পদে না থাকলেও লোকবল ও অর্থ দিয়ে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসিরকে সহায়তা করছেন।
একই মামলায় দাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মুশা ১১৩ নম্বর আসামি। তিনিও খন্দকার নাসিরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
তাছাড়া অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, যিনি গুনবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মামলায় ৬ নম্বর আসামি। তিনি বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত বিতর্কিত কমিটির সভাপতি।
আর রূপপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া এজাহারনামীয় ১৫০ নম্বর আসামি। তিনি নবগঠিত উপজেলা বিএনপির বিতর্কিত কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক। অভিযোগ রয়েছে, মিজানুর রহমান সোনা মিয়া সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের ক্যাশিয়ার ছিলেন।
এদিকে সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু বিস্ফোরক আইনে হওয়া মামলায় ১১২ নম্বর আসামি। তিনিও নাসির গ্রুপের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয় বিএনপি বলছেন, ফরিদপুর-১ আসনে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ঘিরে ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগীতায় ৭ নভেম্বরের সংঘর্ষের মূল কারণ।
জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব দিবসের অনুষ্ঠানে বোয়ালমারিতে বিএনপির দুই পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ দিন সংঘর্ষে দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল। এই ঘটনায় বোয়ালমারি থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।