বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি:
যশোর শহরে রাস্তা ওপর থেকে কোপাতে কোপাতে বাসার মধ্যে নিয়ে পারভেজ হোসেন (৩২) নামে এক যুবককে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮ টার থেকে শহরের ঘোপ বউ বাজার ধানপট্টি এলাকায় প্রকাশ্যে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শফিকুল ইসলাম সোহাগের নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হয়েছেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। পারভেজ সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের হঠাৎ পাড়ার তোতা মিয়ার ছেলে। ঘটনার পর আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন প্রার্থী সোহাগ ও মুদি দোকানী তসলিম উদ্দিন। তারা দুই জন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জীবন ও রাসেল জানান, পারভেজসহ কয়েকজন বোতলমার্কার নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন। তসলিম উদ্দিনের মুদি দোকানের সামনে পৌঁছানো মাত্রই আকস্মিকভাবে একদল যুবক এসে পারভেজকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। এসময় পারভেজের সাথে থাকা লোকজন দিগবিদিক পালায়। কোপানোর সময় পারভেজ দুর্বৃত্তদের উদ্দেশ্য করে বলছিলেন “মামা আমি মরে যাবো আমারে আর মাইরেন না”। জীবন বাচাতে তিনি দোকানী তসলিমের বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে বীরদর্পে চলে যায়। রাসেল আরও জানান, ঘটনার সময় আমি পারভেজের সাথেই ছিলাম। হামলার সময় আমাকেও লোহার রড দিয়ে একটি আঘাত করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের মধ্যে তিনি ৩ জনকে চিনতে পেরেছেন। নিহতের মা চায়না বেগম হাউমাউ করে কাঁদছিলেন আর বলছিলেন “আল্লাহ আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দাও” ছেলের খুনিদের বিচার দাবি করেন তিনি। খালা চায়না বেগম ও রহিমা বেগম জানান, পারভেজ শহরের বড় বাজারে খেলনা সামগ্রী বিক্রি করে। ঘটনার রাতে বউ বাজার এলাকায় বোতলমার্কার প্রার্থী শফিুকল ইসলাম সোহাগের নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন। পারভেজ হোসেন প্রার্থী সোহাগের ফুফাতো ভাই। সন্ত্রাসীরা তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করেছে। নিহত পারভেজ পিতা মাতার একমাত্র ছেলে। তার মৃত্যুতে পিতা মাতা পাগল প্রায়। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. আব্দুর রশিদ জানান, পারভেজকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরের একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ মর্গে রয়েছে। প্রার্থী শফিকুল ইসলাম সোহাগের সাথে থাকা সলেমান জানিয়েছেন, সোহাগসহ তারা এলাকার মোড়ে বসেছিলেন। এ সময় খবর আসে বউবাজার এলাকায় পারভেজকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, লোকজন পারভেজকে ইজিবাইকে তুলছেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তার নাড়িভুড়ি বের হতে দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন প্রার্থী সোহাগ। একই সময় মুদি দোকানী তসলিমও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের দুইজনকে হাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে উপস্থিত যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই নাহিয়ান জানান, খুনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন ঘোপ এলাকার নুরে আলম, নান্টু ও শাহাবুদ্দিন। তাদের আটকে অভিযান শুরু হয়েছে।