বরিশাল জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও বরিশাল নগরীতে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত আছে। আজ ১৫ জুন সোমবা সকালে বরিশাল মহানগরীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন এর যৌথ অভিযানের দেশের নামি-দামি ঔষধ কোম্পানির নকল ঔষধ প্রস্তুতের কারখানা জব্দ করা হয়। বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ সাগরদী দরগাবাড়ির এলাকার ডাক্তার বাড়ি সংলগ্ন হদুয়া মঞ্জিল-২ মাওঃ সাদেক আহমদ এর টিন সেট দোতলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রায় ২ বছর ধরে নকল ঔষধ এর কারখানা চালিয়ে আসছে তারা।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ জিয়াউর রহমান। এসময় বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে নকল ঔষধ ও তা পরিবহনের জন্য নকল সিলযুক্ত কার্টুন সামগ্রীসহ মাসুম বিল্লাহ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসা বাদের এক পর্যায় তিনি, সাগরদী দরগাহবাড়ী রোডের ডাক্তার বাড়ি নামক একটি বাড়িতে তারা নকল ঔষধ তৈরি হয় বলে মাসুম বিল্লাহ জানান। বরিশাল জেলার ড্রাগ সুপার অদিতি স্বর্নাকে সাথে নিয়ে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে এসময় ঘটনাস্থেলে যান। দরগাহবাড়ী রোডে গিয়ে দেখা যায় যে সেখানে কেমিস্ট, গ্লোব, এসিআই, জেনারেল, জেসন, কোহিনূর ইত্যাদি কোম্পানির মোড়কে বিভিন্ন নকল ঔষধ (হেক্সিসল, হ্যান্ডরাব, পেভিসেপ, পলিডন, প্যারাসুট, হিসটাসিন ইত্যাদিসহ বিদেশি অনেক কোম্পানির পণ্য তৈরি করছে) ও তা উৎপাদনের বিভিন্ন কাঁচালাম এবং মেশিন পাওয়া যায়। এসময় ড্রাগ সুপারকে সাথে নিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের নকল ঔষধ জব্দ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বরিশালে এই নকল ঔষধের উৎপাদক ও বিতরণকারী মাসুম বিল্লাহ ও তার সহযোগী নূরে আলম কাজী এসময় দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
ড্রাগ অ্যাক্ট ১৯৪০ এর ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে নকল ঔষধ উৎপাদন ও তা বিক্রির জন্য এসময় একই আইনের ২৭ ধারায় মাসুম বিল্লাহ ও নূরে আলম কাজীকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লক্ষ টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি, যে বাড়িতে ঔষধ উৎপাদিত হতো সেটি সিলগালা করা হয় পাশাপাশি নকল ঔষধ, উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট দ্রব্যাদি সামগ্রী জব্দ করা হয় পরে জব্দকৃত মালামাল আগুনে পুড়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
এসময় বাড়ির মালিকের সাথে যোগাযোগ করে আসতে বললও তিনি আসবেন বলে পরবর্তীতে অসুস্থতার কারণ বলে আসেন নি। অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।