ডেস্ক নিউজ:
১।র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২।গত ২৬ জানুয়ারি ২০২১ ইং তারিখ আনুমানিক ১৪০০ ঘটিকার সময় গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন পশ্চিম পাড়া এলাকায় কতিপয় দুর্বৃত্তরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পুলিশের সোর্স ভিকটিম মোঃ জাকির হোসেন (৬০) এর দুই পায়ের উরু এবং শরীরের একাধিক স্থানে এলোপাতাড়ি ধারালো ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায় এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ভিকটিমের মৃত্যু হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে জিএমপি, টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়, যার নম্বর-৩৯ তারিখ ২৭/০১/২০২১ ধারা- ৩০২/৩৪ দঃবিঃ। এই নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন টেলিভিশন ও সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়। বর্ণিত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে র্যাব-১ তাৎক্ষনিকভাবে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
৩।এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২৮ জানুয়ারি ২০২১ ইং তারিখ আনুমানিক ০৫০০ ঘটিকায় র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন শিলমুন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বর্ণিত হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত মামলার এজাহারনামীয় ০১ নং আসামী মোঃ বিল্লাল হোসেন (২৭), পিতা- শুকুর আলী, মাতা- মিনা আক্তার, সাং- নীলগঞ্জ, পোঃ- বেতবাড়ি, থানা-কিশোরগঞ্জ সদর, জেলা- কিশোরগঞ্জ, বর্তমানে- টঙ্গী শিলমুন প্রাইমারী স্কুলের সামনে, আজমত খানের বাড়ির ভাড়াটিয়া, থানা- টঙ্গী পূর্ব, জিএমপি, গাজীপুর এবং বর্ণিত হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ও হুকুমদাতা মামলার এজাহারনামীয় ০৩ নং আসামী মোছাঃ ঝর্ণা আক্তার (২১), পিতা-মোঃ নুরুল ইসলাম, স্বামী- মোঃ রুবেল হোসেন, সাং- মরকুন পশ্চিম পাড়া, রবের বাড়ির পার্শ্বে, থানা- টঙ্গী পূর্ব, জিএমপি গাজীপুর’দ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ধৃত আসামীদের নিকট হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১ টি চাকু (সুইচ গিয়ার), ০২ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ধৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করে।
৪।গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা সকলে এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী/সন্ত্রাসী। ইতিপূর্বে মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও জোড়া খুনের অপরাধে ধৃত আসামী বিল্লাল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে জেলে যায় এবং অপর আসামী ঝর্ণা আক্তার গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। ভিকটিম সোর্স জাকিরের কারণে এলাকায় তাদের মাদক ব্যবসায় বিঘœ ঘটে এবং বিল্লাল ও ঝর্ণা আক্তারের স্বামীকে আটকের পিছনে সোর্স ভিকটিম জাকিরের ভূমিকা রয়েছে বলে তারা জানতে পারে। এরই প্রতিশোধ হিসেবে ধৃত আসামীদ্বয় তাদের পথের কাঁটা ভিকটিম জাকিরকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন দুপুর বেলায় তাদের পরিকল্পনা মতে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন পশ্চিম পাড়া এলাকায় জাকিরকে একা পেয়ে ধৃত আসামী বিল্লাল তার কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিমের দুই উরুতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে এলাপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। ফলে ঘটনাস্থলেই ভিকটিম জাকির রক্তাক্ত জখম অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উক্ত এলাকার বাসিন্দারা ভিকটিমকে গুরুতর জখম অবস্থায় নিকটস্থ টঙ্গী শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ভিকটিমের মৃত্যু হয়।
৫।উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।