গাজীপুরের কাপাসিয়ায় খুন হওয়া রাজিব হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। রোববার ভোরে নরসিংদীর চরসিন্দুর বাজার থেকে ঘাতক মো. শাহীন ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কাপাসিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার শাহীন নরসিংদীর মনোহরদী থানার মধ্য চালাকচর এলাকার শহীদুল্লাহর ছেলে। শাহীন কাপাসিয়ার সাফাইশ্রীতে নানা আব্দুল রশিদের বাড়িতে ১০ বছর ধরে বসবাস করে পুলিশের সোর্স হিসেবে নিয়োজিত। তার মা কাপাসিয়া থানায় রান্না ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন।
২০০৯ সালের মে মাসে নরসিংদীর মনোহরদী থানার তার বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা হয়। যেটিতে ২০১৬ সালে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এক বছর সাজা খেটে ২০১৭ সালে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের সাফাইশ্রী এলাকায় কলা বাগানে এক অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ পাওয়া যায়। লাশের সন্ধান পাওয়ার প্রায় ৫ ঘণ্টা পর জানা যায় মরদেহটি সাফাইশ্রী এলাকার সুভাষ চন্দ্র ধরের ছেলে রাজিব ধরের। সে ইস্টার্ন ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ড্রাইভারদের দেখাশোনা করতো। তিনি নিজেও একজন চালক ছিলেন। কয়েকমাস আগে চাকরি থেকে বরখাস্তের পর বাল্য বন্ধু শাহীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। যেই বন্ধুর হাতে অবশেষে তাকে প্রাণ দিতে হলো।
১৪ ডিসেম্বর নিহত রাজিবের মা প্রতিভা রাণী ধর অজ্ঞাত লোকদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ছায়া তদন্তে নামে থানা পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও র্যাব। সব সংস্থা হত্যার রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হলেও ক্লু-লেস মামলাটি আলোর মুখ দেখায় তদন্ত কর্মকর্তা পরিদশর্ক আফজাল হোসাইন। তিনি ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতকের মুখ থেকে বের করেন হত্যার প্রকৃত কারণ ও স্বীকারোক্তি।
কাপাসিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আফজাল হোসাইন বলেন, একেবারে তুচ্ছ কারণে রাজিবকে খুন করেছে শাহিন। চরসিন্দুর বাজারের এক নৈশপ্রহরীর সঙ্গে শাহিন বসে ছিল। সেখান থেকে শাহিনের মায়ের সাহায্যে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে শাহিন দোষ স্বীকার করেছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারের পর শাহিনকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। কিন্তু নদীতে ডুবুরী নামিয়েও হত্যায় ব্যবহৃত দা ও আলামত উদ্ধার করা যায়নি। চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সোমবার সকালে ১৬৪ ধারায় শাহিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করতে গাজীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে। একই সঙ্গে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। পুলিশ মাত্র ৭ দিনে ক্লু-লেস মামলাটিকে আলোর মুখ দেখিয়েছে। হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।