রংপুর জেলা তারাগঞ্জ উপজেলার বহুল অালোচিত গৃহবধূ নমিতা রাণীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার দায়েরকৃত মামলার প্রধান অাসামী প্রদীপ চন্দ্র রায় অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছে। তারাগঞ্জ থানার পুলিশ তাঁকে রংপুর শহর থেকে গ্রেপ্তার করে হাজতে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে- তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়ন কাংলাচড়া গ্রামের মৃত্যু তারক চন্দ্র রায়ের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নমিতা রাণী(২৫)সঙ্গে একই গ্রামের মৃত্যু প্রশান্ত কুমার রায় এর ছেলে প্রদীপ চন্দ্র রায়(৩০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এক পর্যায় তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করলে পেটে বাচ্চা অাসে। প্রদীপ তাঁকে বিয়ে না করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকার সচেতন মানুষের সহযোগীতায় অবেশেষে বিয়ে হয় ।
বিয়ের সময় প্রদীপের পরিবারের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে যৌতুক হিসেবে নমিতার পরিবার প্রদীপকে নগত তিন লক্ষ টাকা,একটি মোটর সাইকেল এবং ৪ ভরি স্বর্ণালংকার দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পুর্ন করেন।
বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই অারো যৌতুকের জন্য চাঁপ দিয়ে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতে থাকে নমিতার উপর প্রদীপ এবং তাঁর পরিবার। এরই মধ্যে তাদের ৫টি বছর অতিবাহিত হয় একটি মেয়ে সন্তান নিয়ে।
এ নিয়ে কয়েক দফা স্থানীয় সালিশও হয়। এক পর্যায় প্রদীপ সালিশে যৌতুক নিবেনা বলে এই মর্মে কথা দিয়ে নমিতাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে অাসেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই অাবারো প্রদীপ সহ তাঁর পরিবার যৌতুকের জন্য নমিতার উপর নির্মম অত্যাচার শুরু করে। বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক নিয়ে অাসতে অস্বীকার
করায় গত ১৬ জুলাই ২০২০ইং তারিখ বৃহস্পতিবার বিকেল অানুমানিক ৪:টায় প্রদীপ সহ তাঁর মা ছোটভাই দাদা বউদি মিলে নমিতাকে বৈদ্যুতিকশর্ক, সিকল/রড দিয়ে মারপিঠ কিল ঘুষি ও মুখে বিষ দিয়ে হত্যা করে। নমিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যুর অাগে বলে যাওয়া মোবাইলে রেকর্ড জবানবন্দী তাঁর উপর প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচারের নির্মম সত্য ঘটনাটি উঠে অাসে।
এ ঘটনায় নমিতার বড়দাদা পতিরাম (মাষ্টার) বোনকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ এনে প্রদীপ চন্দ্র রায়, লক্ষী রাণী রায়, দিলীপ চন্দ্র রায়, ধনঞ্জয় রায় এবং পূর্নিমা রাণী সহ পাঁচ জনের নামে তারাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।তারাগঞ্জ থানা মামলা নং ১৪ এবং রংপুর জেলা কোর্ট মামলা নং ৭৩/২০। এ ঘটনার পর মামলার অাসামীরা পালাতক থাকলেও গত ১৫ নভেম্বর রবিবার বিকেলে হত্যা মামলার প্রধান অাসামী প্রদীপকে রংপুর শহর গনেশপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ।
নমিতার বড়দাদা পতিরাম (মাষ্টার) অভিযোগ করে বলেন – এ হত্যা মামলার প্রধান অাসামী প্রদীপ গ্রেপ্তার হওয়া পর থেকে অন্যান্য অাসামীরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অামাকে নানা রকম হুমকি দিয়ে অাসছে। তারাগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শুকুর অালী বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। রবিবার বিকেলে তাঁকে রংপুর শহরের গনেশপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে অাদালতের মাধ্যমে হাজতে পাঠিয়েছি।
এ দিকে হত্যা মামলার প্রধান অাসামী প্রদীপ গ্রেপ্তার হওয়ায় তারাগঞ্জবাসি এবং সমাজের সচেতন মানুষরা প্রশাসনের কাছে খুঁনি প্রদীপ সহ এই হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির জোড়দাবী জানান।