যশোর শহরের কারবালা সিঅ্যান্ডবি রোডে ড্রেনের পাশ থেকে ইসরাফিল হোসেন ওরফে মন্নাত (৪০) নামের এক স্কেভেটর শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি বকচর বিহারী কলোনীর মোস্তফার বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং মণিরামপুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমানের ছেলে। শ্রমিক সরদারের সাথে মন্নাতের স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতের স্বজনেরা।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল ৭টার দিকে সিঅ্যান্ডবি রোডের লুবনা কটেজের সামনে ড্রেনের পাশে ইসরাফিল হোসেনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় সংবাদ দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে।
মন্নাতের মাথায় ও মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং মাথায় লাল গামছা প্যাঁচানো ছিল। তার পরনে লুঙ্গি এবং লুঙ্গির নিচে ট্রাউজার এবং গায়ে চেক শার্ট ছিল। মন্নাত শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে বাসা থেকে বাইসাইকেল যোগে বের হন। রাতে তিনি বাড়ি ফেরেননি। মৃতদেহের পাশ থেকে বাইসাইকেল ও একটা ছাতা উদ্ধার হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) তৌহিদুল ইসলাম লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন।
তবে স্বজনদের দাবি, মন্নাতের স্ত্রীর সাথে শ্রমিক সরদার শাহ আলমের পরকীয়াকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হতে পারে। অবশ্য পুলিশ এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি।
স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার রাতে নিজের বাইসাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলেন মাটিকাটা স্কেভেটরের হেলপার মন্নাত। রাতে আর বাড়িতে ফেরেননি তিনি। শনিবার সকালে কারবালা এলাকার বাসিন্দারা ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে মন্নাতের মরদেহ রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে। এরপর পথচারীরা তার মোবাইল থেকে স্বজনদের ফোন দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সকাল ১০টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। নিহতের মরদেহের পাশে তার ব্যবহৃত বাইসাইকেল ও একটি ভাঙা ইট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে মন্নাতকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের চাচাতো ভাই আল-আমিন জানান, তিনি ও মন্নাত একই লেবার সরদারের আন্ডারে কাজ করতেন। সরদার শাহ আলমের সাথে মন্নাতের স্ত্রীর পরকীয়া ছিল। এক মাস আগে মন্নাত তাদের হাতেনাতে ধরেও ফেলে। সেই দিনই স্ত্রীকে তালাক দেন। ওই ঘটনার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত যশোর কোতয়ালি থানার ওসি (অপারেশন) আবু হেনা মিলন জানান, নিহতের মাথায় ও মুখমন্ডলে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তাকে কে বা কারা কি কারণে হত্যা করেছে তা জানা যায়নি। তবে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে ও মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে রোববার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের ভাই বাবর আলীর কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। বাবর আলী নিহতের লাশ বকচর এলাকার বাড়িতে নিয়ে যান।