1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ অপরাহ্ন

হজম সমস্যা দূর করে আদা

  • সময় : বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩০০

আদা শরীরের জন্য খুব উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, যা শরীরের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে। জ্বর জ্বর ভাব, গলা ব্যথা ও মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। তবে রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদার পুষ্টিগুণ বেশি। মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিস জনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা।

আদার উপকারিতা

হজমের গণ্ডগোল দূর করতে প্রতিদিন পান করুন আদা-পানি। এক গ্লাস আদামিশ্রিত পানিতে ২ চা চামচ পুদিনার রস, লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন। এটি মর্নিং সিকনেস দূর করবে।

আদা ও লেবু মিশ্রিত পানিতে রয়েছে জিঙ্ক যা নিয়মিত পান করলে ডায়াবেটিকের ঝুঁকি কমে।

আদামিশ্রিত পানি মেদ দূর করতে সাহায্য করে।

আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক ও চুলের জৌলুস বাড়ায়।

ঠাণ্ডা লাগা ও কাশিতে কুসুম গরম আদা-পানি পান করতে পারেন। 

একটুকরো কাঁচা আদা হাজারো রোগ-ব্যাধির মুক্তিদাতা। জ্বর, ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি, কাশি, খাওয়ার অনিচ্ছা থেকে শুরু করে হাত-পায়ে জোড়ায় ব্যথা– সব কিছু থেকেই মুক্তি দেয় কাঁচা আদা। এক টুকরা কাঁচা আদাই যেন শরীরের রোগজীবাণু বেঁধে ফেলে। আসুন জেনে নেয়া যাক আদার আরও কিছু গুণাগুণ সম্পর্কে-

পেটের পীড়ায়
পেটের অস্বস্তি বা পীড়ায় আদা একটি আদর্শ পথ্য। হজমে সহায়তার পাশাপাশি খাবারের গুণাগুণ শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে দিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে আদা। কিছু খাওয়ার পর পেটব্যথায় ভোগার সমস্যা হলে তা দূর করে আদার রস। পেটে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও প্রতিরোধ করে এটি।

ফুসফুসের জন্য উপকারী
ফুসফুসের সাধারণ যে কোন সংক্রমণ বা রোগের ক্ষেত্রে আদা বেশ কার্যকরী। সর্দি- কাশি, শ্বাস- প্রশ্বাসের সাধারণ সমস্যা দূর করে আদা। গলা ও স্বরতন্ত্রী পরিষ্কার রাখে।

১০০ গ্রাম আদায় আছে ৮০ ক্যালরি শক্তি, কার্বোহাইড্রেট ১৭ গ্রাম, ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৫ মিলিগ্রাম এবং ৩৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস।

ব্যথানাশক
অসটিও আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে শরীরের প্রায় প্রতিটি হাড়ের জোড়ায় প্রচুর ব্যথা হয়। এই ব্যাথা দূর করে আদা। তবে রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদা এক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী, এতে আদার পুষ্টিগুণও বেশি থাকে। শরীরের যেকোন ধরনের ব্যথাতে আদা টনিকের মতো কাজ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আদা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা লুকানো জীবাণুকে ধ্বংস করে।

ক্ষত শুকাতে
দেহের কোথাও ক্ষত থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি, যা কাটাছেঁড়া, ক্ষত দ্রুত ভালো করে।

হার্ট ভালো রাখে
রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে আদা খুবই কার্যকর।

মাইগ্রেন, ডায়াবেটিস ইত্যাদিতে
মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিসজনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা। গর্ভবতী মায়েদের সকাল বেলা, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে শরীর খারাপ লাগে। কাঁচা আদা দূর করে এ সমস্যা।

রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে
পরিমিত আদা খাওয়ার অভ্যাসে শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়। আদায় রয়েছে ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক। এসব উপাদান রক্ত প্রবাহের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে।

বমিভাব দূর করে
যানবাহনে চড়ার সময় কেউ কেউ অস্বস্তিতে ভোগেন বা কিছুক্ষণ গাড়িতে থাকার পর বমি চলে আসে। বমি বমি ভাব দূর করতে আদার ভূমিকা অপরিহার্য। বমি ভাব হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এটি তাৎক্ষণিক উপকার মেলে। আর এতে মুখের স্বাদও বাড়ে।

ঠাণ্ডা-জ্বরে আদা
ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর প্রতিরোধে আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে। আদার রস একটু গরম করে সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেলে ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর সেরে যায়।

শ্বাসকষ্ট সারাতে  আদা-মধু একসঙ্গে
আমরা রোজ কোনো না কোনো শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হই। যার মধ্যে কিছু নিতান্তই সাধারণ রোগ রয়েছে যা আমাদেরকে ভবিষ্যতে নানা শারীরিক ঝুঁকির সম্মুখিন করে। তবে এই ধরণের ছোট খাটো সমস্যা থেকে শুরু করে বড় বড় রোগকে সমূলে উৎপাটন করতে পারে একমাত্র প্রাকৃতিক কিছু উপাদান। প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে আদা এবং মধু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আদা এবং মধু একসঙ্গে খেলে রক্ত সঞ্চালনজনিত সমস্যা দূর হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখে। আসলে আদা এবং মধুর মধ্যে আলাদাভাবে হাজারো ভেষজ গুণ রয়েছে।

আদা এবং মধু খাওয়ার সবথেকে ভাল উপায় হল, এক চা চামচ আদার রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে তারপর খাওয়া। নিম্নে আদা ও মধুর একত্রে খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা উল্লেখ করা হলো।

১) শ্বাসকষ্ট সারাতে সাহায্য করে
 মধুর সঙ্গে নিয়ম করে আদা এবং গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে শ্বাসকষ্ট দূর হয়ে যায়। এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে প্রহাদজনিত সমস্যা এবং দুশ্চিন্তা যেমন দূর হয়, তেমনই ফুসফুসে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন পৌছাতে পারে।

২) শ্বাস প্রশ্বাস পদ্ধতিতে উন্নতি ঘটায়
সর্দি, কাশি হলে বা বুকে সর্দি বসে অনেক সময় শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। আবার অনেক সময় সর্দি লেগে নাক দিয়ে পানি পড়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়া মুশকিল হয়ে পরে। এই রকম সমস্যায় মধুর সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে দ্রুত কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৩) বমি হওয়ার সম্ভাবনা দূর করে
মধুর সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে বমিভাব  বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা কেমোথেরাপির পর অনেকেই বমি করেন। তাঁদের জন্যও এই ঘরোয়া পদ্ধতি খুবই কার্যকরী ভূমিকা নেয়।

৪) ক্যান্সার রোধ করে

মধুর সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে তা ক্যান্সার রোধ করতে পারে। কারণ এই দুই উপাদানের মধ্যেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয় এবং ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে দেয়।

৫) হজমে সাহায্য করে
আদা  খুব সহজেই খাদ্য হজম করাতে পারে। তাই তো নিয়মিত আদার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে হজম সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর হয়। সেই সঙ্গে পেট সংক্রান্ত অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

৬) হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে
ধমনীর চাপ দূর করে আমাদের হৃদ যত্নের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুণভাবে কাজে আসে আদা এবং মধু। শুধু তাই নয়, রক্ত চাপ স্বাভাবিক রাখতে এবং রক্তনালীর সমস্যা দূর করতে এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতেও এই দুই প্রকৃতিক উপাদানের কোনও বিকল্প নেই।

৭) ঋতুস্রাবের ব্যাথা দূর করে
ঋতুস্রাবকালীন ব্যাথা নারীদের কাছে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এই ধরণের ব্যাথা খুব কষ্টকর। তাই এ ধরণের ব্যাথা নির্মূল করতে আদা এবং মধুর মিশ্রণ খাওয়া জরুরি।

৮) মাথা ব্যাথা ও যন্ত্রণা দূর করে

মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যা কম বেশি সবারেই রয়েছে ।এ সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে হলে আদা ও মধুর মিশ্রণ খাওয়া খুবই কার্যকরী।তাই মাথা যন্ত্রণ ও মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে এ ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন ।

৯) স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা কমায়
রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার কারণে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর এক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।তাই এ থেকে সাবধান হাওয়াটা খুব জরুরি। নিয়মিত আদা এবং মধু খাওয়া শুরু করুন। কারণ এই দুটি উপাদান রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের আশঙ্কা দূর হয়।

১০) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
আদা এবং মধুর মিশ্রণ আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। কারণ এই মিশ্রন শ্বেতরক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তোলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।

শীতের সর্দি-জ্বর সারাবে আদা-রসুনের স্যুপ
শীত শুরু হতেই হাজির হয় জ্বর, সর্দি, অ্যাজমা, গলা ব্যথা ও ইনফেকশন। এই সময় সর্দি, জ্বর দূরে রাখতে আদা, রসুনের বিকল্প নেই। পুরনো সেই আদা, রসুনের মিশ্রনে তৈরি স্যুপের উপর ভরসা রাখতে পারেন আপনিও। শুধু জ্বর হলেই নয়, সারা শীতকালেই খেতে পারেন এই স্যুপ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪