মোঃ শামসুর রহমান তালুকদার-
টাঙ্গাইলে আওয়ামী পন্থী বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সুবিধাবাদি নেতারা খোলস পাল্টিয়ে এখন বিএনপিতে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় দীর্ঘদিনের নির্যাতিত ও বঞ্চিতরা কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। ফলে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে তাদের মাঝে। তেমনি টাঙ্গাইল বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা নুরুল ইসলাম নিজেকে বিএনপিপন্থী দাবি করে কেন্দ্রিয় পদ বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শ্রমিক সংগঠনে উত্তেজনা ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-১ দপ্তরে এসবিএ-ডি হিসেবে কর্মরত চাকুরী জীবনের শুরু থেকেই নুরুল ইসলাম শ্রমিক লীগের হয়ে শ্রমিক রাজনীতির (বি-১৫০৬) সাথে জড়িত হন। পরবর্তীতে বি-১৮৮৬ (বিএনপি) এর সংগঠনে যোগদান করেন। ২০০২ সালে বিএনপির আমলে জাতীয় বিদ্যুত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। এই সময়ে তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগ উঠে। পিডিবির উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ তদন্তপুর্বক তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করে তাকে।
একাধিক শ্রমিক নেতার অভিযোগ, ১/১১-এর পরে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে জাতীয় বিদ্যুত শ্রমিক লীগের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখার সাথে ভয়ভীতি ও হয়রানীর মাধ্যমে অনেক শ্রমিককে পক্ষে নেন। কেন্দ্রিয় নেতাদের ম্যানেজ করে শ্রম আদালতে আবেদন করে চাকুরী ফিরে পান। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়েও সে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে নানা কর্মকান্ডে অংশ নেয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় , গত প্রায় ১৫/১৬ বছর জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মাসিক বেতন-ভাতার সাথে ১০ (দশ) টাকা করে চাঁদা প্রদান করেছেন তিনি। এই চাঁদা তিনি ২০২৩ সালের আংশিক পর্যন্ত পরিশোধ করেছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই নিজেকে বিএনপি নেতা বলে দাবি করেন। এরই মধ্যে নির্যাতিত বিএনপিপন্থী শ্রমিকদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন তিনি। কেন্দ্রিয় পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন নুরুল ইসলাম। বিএনপি পন্থী হিসেবে পরিচয় না দেয়ার জন্য তাকে অনেক নেতা মৌখিকভাবে বারণ করলেও তা আমলে নিচ্ছেনা তিনি।
বি-১৮৮৬ (বিএনপি) শ্রমকি সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, নুরুল ইসলাম এক সময় বিএনপি পন্থী শ্রমিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল। কিন্তু গত প্রায় ১৫ বছর জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য হিসেবে নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ করেছেন। তিনি এখন বিএনপির কেউ নন।
শ্রমিক সংগঠনের জেলা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা জানান, ২০০৪ সালে নুরুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক পদে আমার কাছে হেরে যান। এরপর থেকে আমাদের সংগঠন ত্যাগ করেন। গত ৫ আগষ্টের পর নিজেকে পুনরায় বিএনপির লোক বলে পরিচয় দিচ্ছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে একটি চক্র। ওয়ান১/১১-এর সময় আমার চাকুরী চলে যায়। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শ্রম আদালতের মাধ্যমে চাকুরী ফিরে পাই। আমি বাংলাদেশ জাতীয় বিদ্যুত শ্রমিক ইউনিয়ন-বি ১৮৮৬ সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছি। গত প্রায় ১৫ বছর তার কাছ থেকে জোর করে চাঁদা নেয়া হয় বলেও জানান নুরুল ইসলাম।