ফরিদপুর প্রতিনিধি-
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় স্বামী ও তার ভাই-বোনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে তিন সন্তানের জননী রাশিদা বেগমকে (৩৭) আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে বাবা আবু সাইদ মোল্যা থানায় মামলা করেছেন।
গত ৮ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা থানায় করা এ মামলায় রাশিদার স্বামী মো. আজগর হোসেন (৫০), তার ভাই উপজেলা কৃষক দলের নেতা আরব আলী (৩৮), আশরাফ আলী (৪৫) ও মর্জিনা বেগমকে (৫৫) আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামের প্রয়াত মোস্তফা মোল্যার ছেলে-মেয়ে। আর মামলার বাদী আবু সাঈদ মোল্যা একই ইউনিয়নের কাতলাসুর গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগে বলা হয়, রাশিদা বেগমের সঙ্গে আজগর হোসেনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১৮ ও ১৪ বছর বয়সী দুই মেয়ে এবং ৮ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে গত ১৯ বছর ধরে স্বামীর সংসারে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি।
এমনকি স্বামী আজগার হোসেন প্রবাসে থাকার সময় তার ভাই-বোনদের প্ররোচনায় মোবাইলে স্ত্রী রাশিদা বেগমকে মানসিক নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে বহুবার স্থানীয় ও প্রশাসনিকভাবে শালিসও হয়েছে। কিন্তু রাশিদার ওপর অত্যাচারের মাত্রা দিনদিন বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে গৃহবধূ রাশিদা বেগম তার জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে গত ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত আরব আলীর বসতঘরে বিষ পান করেন।
গুরুতর অবস্থায় রাশিদাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরেরদিন সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে রাশিদার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় একদিন পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ৭ ডিসেম্বর দুপুর ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।
চাঞ্চল্যকর এ মামলার আসামিরা পলাতক জানিয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-অর রশীদ বলেন, ‘পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।’
মামলায় অন্যতম আসামি আরব আলী আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে জানিয়ে উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক হাদী জিয়া বলেন, ‘পুলিশ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।