1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
 ‘কেমন পুলিশ চাই’জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হাইকমিশনে হামলা জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট বরখেলাপ- বিএনপি মহাসচিব পার্শ্ববর্তী দেশের গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা খবর প্রচার করছে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মার্চে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ-ইসি পার্বত্য অঞ্চলকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়-প্রধান উপদেষ্টা নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রথম বৈঠক আজ প্রধান উপদেষ্টার  নিকট  ‘অর্থনীতির শ্বেতপত্র’ হস্তান্তর খুনের পরিকল্পনা আগেই জানতো পুলিশ, ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু দেশের ক্রান্তিকালে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে-সেনাপ্রধান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়  তারেক রহমানসহ সকল আসামি খালাস

খুনের পরিকল্পনা আগেই জানতো পুলিশ, ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

  • সময় : রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১০

সাকিব আসলাম

ঢাকার আশুলিয়ায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মারা যায় ফয়সাল কবীর (৩২) নামের এক ব্যবসায়ী। হত্যাকান্ডের কারণ খুঁজতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে এই হত্যাকান্ডের আগেই খবর পেয়েছিলেন পুলিশ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি নিহত ফয়সালের। 

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আশুলিয়ার মধ্য গাজীরচট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পর মোটরসাইকেল যোগে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

নিহত ফয়সাল কবির ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার ধর্মদি দক্ষিনপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। সে মধ্য গাজীরচট এলাকার হাজী হেলাল খন্দকারের বাড়িতে পরিবারসহ ভাড়া থাকতেন। নিহত ফয়সাল স্থানীয় ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী মাজহারুল হকের অফিসে সহকারী হিসেবে কাজ করতো বলে জানা যায়। এর পাশাপাশি গার্মেন্টসের বিভিন্ন ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন তিনি।

জানা গেছে, শনিবার বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউনিক মধ্য গাজীর চট মহল্লার কাজী বাড়ির সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ৮-৯ জনের একদল সন্ত্রাসী ফয়সালকে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে ফেলে রাখে। পরে স্থানীয়ারা ফয়সালকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী হ্যাপি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল ও পরবর্তীতে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, জমি দখলের বিরোধের জেড়েই খুন হয় ফয়সাল। তবে পরিবারের দাবী কোন শত্রু বা কারো সাথে বিরোধ ছিল না তার। প্রাথমিক অনুসন্ধানে কিছু তথ্য আসে প্রতিবেদকের হাতে। পাওয়া যায় হত্যাকান্ডের আগ মুহুর্তের একটি সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানে বিকেল ৫টা ৪৭মিনিটে মধ্য গাজীরচট এলাকার কাজী বাড়ী গলির প্রবেশ মুখের ফুটেজে নিহত ফয়সালকে দৌড়ে পালাতে দেখা যায়। তার পিছনে আরও একজনকে দৌড়াতে দেখা যায়। একই সময়ে পর পর তিনটি মোটর সাইকেল প্রবেশ করে কাজী বাড়ীর গলিতে। সেখানে ৭-৮ জনকে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। 

এছাড়া আরও একটি ভিডিও আসে প্রতিবেদকের হাতে। সেখানে এই হত্যার পরিকল্পনার সম্পর্কে ধারণা দেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন নিহত ফয়সাল কবিরের উপর হামলা হতে পারে এমন খবর আগে থেকেই জানত পুলিশ। হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্যে অস্ত্রের মহড়া চলছে এমন খবরও ছিল তাদের কাছে। 

একথা গুলো বলতে শোনা যায় গোপনে ধারণ করা এক উপ-পরিদর্শকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে। স্বীকারোক্তিমূলক ওই ভিডিওতে আরও দেখা যায় আশুলিয়া থানার এক উপ-পরিদর্শক বলছেন, ” যারা মারছে তারা আজকেই রাতের মধ্যেই গ্রেপ্তার হবে। আমি রাতে ঘুমাবো না। আমি পারি নাই তাকে সেফ করতে। চার জন কনস্টেবল সিভিলে নিয়ে আমি নিজে পোশাক পরে গাড়ি নিয়ে ঘুরছি, যাতে এই ঘটনা না ঘটে। ওরা যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে আমার নলেজে আসছে। এই মহড়াতো প্রতিদিন দিচ্ছে।” এছাড়া আজকে বিকেলে ফয়সাল বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এসেছিলেন এ কথাও বলতে শোনা যায় তাকে। 

নিহত ফয়সাল কবিরের ঘনিষ্ঠ বোরহানের সাথে কথা বলে জানা যায় বেশ কিছু তথ্য। আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে মালিকানা নিয়ে একটি জমি ঘিরে চলছে বিরোধ। একই জমি নিয়ে বেশ কয়েকজনের মধ্যে দশ বছরের বেশি সময় ধরে এই বিরোধ চলে আসছে। তবে বোরহান ও নিহত ফয়সাল দুজনেই কাজ করতেন মালিক দাবী করা শারমিন রহমান নামের এক নারীর পক্ষে। 

মুঠোফোনে বোরহানের দাবী, আজকে ফয়সাল একাই বাইপাইল গিয়েছিলেন। সেখানে তাকে মারার জন্য কয়েকজন বোরহানের বাড়িতে যায়। কিন্ত তাকে না পেয়ে ফয়সালের উপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। কে কে হামলা করেছে সময়মতো নিজেই তা পরিষ্কার করে জানাবেন বলে প্রতিবেদককে জানান তিনি। 

নিহত ফয়সালের ছোট বোন আয়শা আক্তার মিশু বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, বিকেলে ফোন করে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফয়সাল। ছোট মেয়ে বেড়াতে যাওয়ার আবদার করে তাই সে ফোন করে বের হতে বলেন। কিন্ত মাঝ পথে গেলে আমাদের খবর দেয় কে বা কারা ভাইকে মেরেছে। খবর পেয়ে দৌড়ে সেখানে যাই। তবে সবাই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি সে মারা গেছে। 

তিনি আরও বলেন,  আমার ভাইয়ের কোন শত্রু ছিল না। সে কিছু দিন আগে চাকরি ছেড়েছেন। পাশাপাশি একটা ব্যবসা করতেন। তাই চাকরী টা ছেড়ে দিছেন। আমার ভাইয়ের সংসার জীবনে বড় ছেলে মেজবাহ হক রিয়ান (১২) ও মেয়ে আরিশা কবির ফাইজা(৩) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। আজ থেকে তারা এতিম হয়ে গেল, আমরাও একমাত্র ভাইকে হারালাম। পরিবারের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার দাবি করেন তিনি।

এবিষয়ে আশুলিয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম রয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করছে। খুব শিঘ্রই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।

ব্যবসায়ী ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশ আগে থেকেই জানতো কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না, জানলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম। 

বা বু ম/ এস আর

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪