স্টাফ রিপোর্টার-
জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানাধীন কর্নসূতি এলাকার লাল চাঁদ’কে কুপিয়ে হত্যার পর প্রধান অভিযুক্ত মোঃ নীরব পরিচয় গোপন করে গার্মেন্টস কর্মীর পরিচয়ে
গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকায় আত্মগোপন করে।
অবশেষে পালিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। র্যাব -৩ এর অভিযানে গতকাল (২৫ মার্চ) বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার হয় নীরব।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে র্যাব -৩ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিগত ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানাধীন কর্নসূতি এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নৃশংসভাবে খুন হন
মোঃ লাল চাঁদ (৩০)। ওই হত্যাকান্ডের মামলায় গ্রেফতারকৃত নীরব প্রধান অভিযুক্ত।
তিনি আরও জানান, নীরব এবং নিহত লাল চাঁদ একই এলাকায় বসবাস করে আসছিল। ঘটনার বেশকিছুদিন আগ থেকে লাল চাঁদ এর সাথে ধৃত আসামীর পরিবারের জমিজমা সংক্রান্ত শত্রুতা গড়ে ওঠে। শত্রুতার জের ধরে লাল চাঁদকে উচিত শিক্ষা দেবে বলে গ্রেফতারকৃত নীরব পরিকল্পনা করতে থাকে। তার পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২০১৭ সালের ১৫ই মে সন্ধ্যায় নীরব এবং তার সাথে আরও কয়েকজন সহযোগী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লাল চাঁদ এর বাড়িতে গিয়ে কৌশলে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শাহবাজপুর এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে নীরব এবং লাল চাঁদ এর সাথে কথা কাটাকাটি চলতে থাকে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নীরব উত্তেজিত হয়ে লাল চাঁদকে আঘাত করে।
পরবর্তীতে নীরব এবং তার সহযোগীরা মিলে তাদের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে লাল চাঁদকে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকে। লাল চাঁদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসার বিষয়টি তার বাবা জানতে পারায় তাকে খুঁজতে খুঁজতে শাহবাজপুরের দিকে যায়। তার বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে গ্রেফতারকৃত নীরব এবং তার সহযোগীরা ভিকটিম লাল চাঁদকে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করছে। লাল চাঁদকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার বাবা চিৎকার করতে থাকে। তার ডাকচিৎকার শুনে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতারকৃত নীরব এবং তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল থেকে লাল চাঁদকে গুরুতর জখম অবস্থায় সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লাল চাঁদকে রাত ৯:৪০ মিনিটে মৃত ঘোষনা করেন। লাল চাঁদ এর মৃত্যুর পরে তার বাবা বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামীকে করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
অধিনায়ক বলেন, গ্রেফতারকৃত নীরব হত্যাকান্ডের পর থেকে নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকা জেলার কাশিমপুর এলাকায় আত্মগোপনে থাকতে শুরু করে। নীরব এলাকা থেকে পালিয়ে ঢাকা জেলার কাশিমপুর এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী হিসাবে কাজ শুরু করে। উক্ত মামলায় অন্যান্য পলাতক সকল আসামিদের গ্রেফতারের জন্য র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।