স্টাফ রিপোর্টার-
আলোচিত সাভারের আশুলিয়ায় গলাকেটে ব্যবসায়ী ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার কাজিমুদ্দিনকে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারী আব্দুল লতিফকে আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
গত বুধবার সকালে ঢাকার আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় লিপি ডেইরী ফার্মের বিশ্রাম রুম থেকে ফার্মটির স্বত্বাধিকারী কাজিমুদ্দিনের (৫০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে আশুলিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ভিকটিমের ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার ( ৯ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কাওরানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল আনুমানিক ১০টায় সাভারের আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় লিপি ডেইরী ফার্মের বিশ্রাম রুম থেকে ফার্মটির মালিক কাজিমুদ্দিনের (৫০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নিহতের আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয়রা এটি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ধারণা করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি রাজনৈতিক হত্যাকান্ড বলে খবর প্রকাশিত হয়।
ওই হত্যাকান্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার সূত্র ধরেই গত রাতে র্যাব-৪ এর একটি দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আব্দুল লতিফ জানায়,সে কাজিমুদ্দিনের বড় ভাইয়ের ছেলে। তার বাবা মৃত্যুবরণ করার পর থেকেই সে তার চাচাদের সাথে বসবাস করতো। লতিফের পৈত্রিক সম্পত্তি অংশীদারিত্ব নিয়ে ভিকটিম চাচার সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল তার। বিষয়টি নিয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হতো।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ডেইরি ফার্মের বিশ্রাম রুমে থাকার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিলেন কাজিমুদ্দিন।
পরবর্তীতে রাতে লতিফ ডেইরী ফার্মে এসে তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে কথা বললে আবারও বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে লতিফ উত্তেজিত হয়ে রুমের ভেতরে থাকা বটি নিয়ে চাচা কাজিমুদ্দিনের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, লতিফ হত্যার ঘটনাটি যেন কেউ বুঝতে না পারে সেজন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে ফার্মের রুমের দরজা তালা দিয়ে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বটি পাশের রুমে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ৭ ফেব্রুয়ারি ফার্মের কর্মচারী গরুর ওষুধ নেওয়ার জন্য চাবি নিয়ে দরজা খুলে রুমের ভেতরে গলাকাঁটা নিথর দেহ ঘরের বিছানার উপরে দেখতে পায়। হত্যাকান্ডের কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রেফতারকৃত লতিফ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার এড়াতে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র্যাব তাকে গ্রেফতার করে।