1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকাবাসীকে নিরাপত্তা প্রদানের মহান দায়িত্বে পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই-ডিএমপি কমিশনার আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধি দল সবজি, পেঁয়াজ ও মুরগির দাম কমলেও, কমেনি আলুর দাম ঘোষিত হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ডিএমপি কমিশনার মোঃ সাজ্জাত আলীর দায়িত্বভার গ্রহণ নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক হবেন- প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ও খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষেই দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সংঘটিত হবে-আইন উপদেষ্টা

বিয়ের চাপ দেয়ায় প্রেমিকাকে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয় নদীতে

  • সময় : মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৯৬

স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর আশুলিয়া এলাকার শিমুলিয়ার বংশাই নদীতে ভাসমান অজ্ঞাতনামা নারীর লাশ উদ্ধারের পর র‌্যাবের OIVS প্রযুক্তির সহায়তায় মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে র‍্যাব। পাশাপাশি ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও  হত্যায় সরাসরি জড়িত এনামুল সানা সহ অপর সহযোগীকে আলামতসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- এনামুল সানা (২৭) ও সোহাগ রানা (২৮)। এ সময় নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে র‌্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা হত্যাকাণ্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছেন।

র‍্যাব জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে এনামুল ও রুবিনার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। রুবিনা বিয়ের কথা বললে এনামুল অস্বীকৃতি জানায় এবং রাগান্বিত হয়ে পড়লে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে এনামুল ক্ষিপ্ত হয়ে রুবিনার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে রুবিনার মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ৯ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন শিমুলিয়া ইউনিয়নের বিক্রমপুর এলাকায় বংশাই নদীতে একটি অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন নৌ-পুলিশ ও র‌্যাবকে বিষয়টি অবহিত করে। পরবর্তীতে র‌্যাব-৪ এর গোয়েন্দা দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় OIVS (On-Sight Identification & Verification System) ব্যবহার করে নদীতে ভাসমান অজ্ঞাত নারীর মৃতদেহটির নাম ও পরিচয় শনাক্ত করে। ভাসমান মৃতদেহটি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থানার রঘুনাথপুর দোলাপাড়া গ্রামের আব্দুল ওয়ারেছের মেয়ে রুবিনা খাতুনের।

কমান্ডার মঈন বলেন, পরবর্তীতে র‌্যাব-৪ নিহতের পরিবারের সদস্যদের সংবাদ দিলে তারা রাজধানীর আশুলিয়া এসে এই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে গত ১০ ডিসেম্বর আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও প্রিন্ট ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাব গোয়েন্দা নজদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়া থানাধীন টেংগুরী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাবকে জানায়, নিহত রুবিনা খাতুন নরসিংদী জেলার পলাশ এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। গত ৬ মাস আগে গ্রেফতার এনামুলের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহত রুবিনার পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। গ্রেফতার এনামুল পরিবারসহ আশুলিয়া ভাড়া বাসায় বসবাস করতো এবং আগে গার্মেন্টসে সুপারভাইজারের চাকরি করতো। বর্তমানে সে ভাড়ায় নিজের মোটরসাইকেল চালায়। এনামুল প্রায়ই রুবিনাকে অধিক বেতনে অন্যত্র চাকরি দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আশুলিয়ায় আসতে বলতো।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর গ্রেফতার এনামুলের স্ত্রী ও সন্তান গ্রামের বাড়ি খুলনার পাইকগাছায় চলে যায়। এনামুল রুবিনা খাতুনকে সুযোগ বুঝে তার আশুলিয়া ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে এবং বিভিন্ন মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার বাসায় রাখে। বাসায় অবস্থানকালীন সময় রুবিনা এনামুলকে বারংবার বিয়ের কথা বললে এনামুল বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়।

এসময় বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও ঝগড়া হয়। গত ৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রুবিনা এনামুলকে পুনরায় বিয়ের কথা বলায় এনামুল বিয়েতে আবারও অস্বীকৃতি জানায় এবং প্রচুর রাগান্বিত হয়ে পড়লে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়।

একপর্যায়ে এনামুল ক্ষিপ্ত হয়ে রুবিনার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, রুবিনাকে হত্যার পর গ্রেফতার এনামুল কীভাবে ঘটনা ধামাচাপা দেবে সে বিষয়ে উপায়ন্ত না দেখে এনামুল তার দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু গ্রেফতার সোহাগকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করে তার বাসায় আসতে বলে।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে সোহাগ রাত ৮টার দিকে এনামুলের বাসায় আসে এবং রুবিনার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে নদীতে ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক এনামুল ও সোহাগ রাত ৩টার দিকে সম্মিলিতভাবে রুবিনার মৃতদেহটি চাদর দিয়ে পেচিয়ে বাসার নিচে নামিয়ে আনে। এরপর রুবিনার মৃতদেহ এনামুলের মোটরসাইকেলের মাঝে বসিয়ে পেছনে সোহাগ লাশটি ধরে রাখে।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, এনামুল মোটরসাইকেল চালিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আনুমানিক ৫ কিলোমিটার দুরত্বে বংশাই নদীর উপর রাঙ্গামাটজে পোঁছায় এবং পরিকল্পনা মোতাবেক রুবিনার মৃতদেহটি থেকে নদীতে ফেলে দেয়। পরে তারা নিজ নিজ বাসায় গিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করে। তাদের মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মায় , যেহেতু তারা গোপনে লাশটি নদীতে ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছে এবং লাশটি খুঁজে পাওয়া গেলেও তার হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে পারবে না। সুতরাং তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হবে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার এনামুল একাধিক নারীঘটিত বিষয়ে লিপ্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে খুলনার পাইকগাছা থানায় শিশু অপহরণ, চুরি ও মারামারি সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার সোহাগ গত ২ বছর ধরে ঢাকায় অবস্থান করছে। সে পেশায় একজন বাসের হেলপার। সে গ্রেফতার এনামুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় তার যাবতীয় অপকর্মের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পাশে থাকত। সে ইতোপূর্বে ঢাকার ধামরাই থানায় মাদক মামলায় কারাভোগ করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪