নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার দুপুরে ঢাকার ধামরাইয়ে থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ টিয়া আক্তার নামের এক নববধূসহ শাশুড়ীকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদের দুই তলায় চেয়ারম্যানের খাস কামরায় নিয়ে জোরপূর্বক ননজুডিশয়াল সাদা স্ট্যাম্পে সই নেয়া ও নারী পুলিশ ছাড়াই নারীদের বাঁশঝাড়ের ভেতর ধাওয়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসআই ও চেয়ারম্যানের দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা ও বসত বাড়ী লিখে না দেয়ায় নববধূসহ শাশুড়ীকে এভাবেই ধরে নেয়া হয় ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের খাস কামড়ায়। তাদেরকে সিভিল পোশাকে ও সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেটকারে টেনে টেনে হেঁচড়ে তুলে নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে।
এমন অভিযোগ ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের লোল্লা ও ধামরাই থানার এসআই সঞ্জয় মালোর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগিরা সোমবার রাত ৯টার দিকে ধামরাই থানায় হাজির হয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ হাতকোড়া গ্রাম ও গাঙ্গুটিয়া ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের খাস কামড়ায়।
ভুক্তভোগী পরিবার জানান, গাঙ্গুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লার যোগসাজসে ধামরাই থানার এসআই সঞ্জয় মালো দক্ষিণ হাতকোড়া গ্রামের পরাণ আলীর বাড়ীতে সোমবার দুপুর ১টার দিকে অভিযান চালায়। এসময় ওই বাড়ীর পুরুষ লোকজনকে না পেয়ে নারীদের বাঁশঝাড়ের ভেতর দিয়ে নারী পুলিশ ছাড়াই ধাওয়া করে।
এসময় আকলিমা আক্তার নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী পালালেও তার বৃদ্ধা মা হাছনা আক্তার ও ভাবী নববধূ টিয়া আক্তারকে পুলিশ ধরতে সক্ষম হয়। এরপর অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে টেনে হেঁচড়ে সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেটকারে তোলা হয়।
পরবর্তীতে তাদেরকে নেয়া হয় গাঙ্গুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের খাস কামড়ায়। সেখানে পূর্ব থেকেই উপস্থিত ছিলেন গাঙ্গুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা। এসআই জিম্মি করে ১০ লাখ টাকা এবং চেয়ারম্যান চায় বশতবাড়ী লিখে। তারা এতে রাজী না হওয়ায় এরপর নেয়া হয় নন জুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর।
এব্যাপারে বৃদ্ধা ওই গৃহকত্রী হাছনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে আকলিমার স্বামী জনি ৭ বছর ধরে প্রবাসে থাকে। এসুযোগে চেয়ারম্যান কাদের মোল্লা আমার মেয়েকে কু- প্রস্তাব দেয়। রাজি হতে আমার মেয়েকে গাড়ী বাড়ী করে দেওয়ার লোভ দেখায়। আমার মেয়ে রাজী না হওয়ায় এসআই দেলোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতে এক গ্রাম্য সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সালিশ বৈঠকে চেয়ারম্যান ক্ষমা প্রার্থনা করে। এরপর থেকেই ওই চেয়ারম্যান আমাদের ঘোরবিরোধী। এর জের ধরে ওই চেয়ারম্যান পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় আক্রোশ মেটাতে এঘটনা ঘটিয়েছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ধামরাই থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় মালো বলেন, আমি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কারও সই নেইনি। তাদেরকে ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেই। তাদের কাছে কোন টাকা চাইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, আমি এর সাথে জড়িত নই। এ কাজ পুলিশের। যা করেছে, পুলিশই করেছে। আমি কিছুই করিনি।
এব্যাপারে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হারুণ অর রশীদ বলেন, বিষয়টি বিশদভাবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।