1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

সাভারে শীর্ষ সন্ত্রাসী পাভেল আহমেদের নির্দেশে অনুসারীদের মানববন্ধন

  • সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার :

ঢাকার সাভারে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেটের ব্যবসায়ীকে মারধর, চাঁদাবাজি ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া একাধিক মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী পাভেল আহমেদের পক্ষে ভুঁইফোড় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, ভাড়াটে ভিক্ষুক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ডেকে মানববন্ধন করেছে তার অনুসারীরা।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় অন্ধ সংস্থা মার্কেটের ব্যবসায়ী বৃন্দ ও জাতীয় অন্ধ সংস্থার অন্ধ ভাই ও বোনেরা ব্যানার লিফলেট ব্যবহার করে সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করে তারা।

আয়োজিত মানববন্ধনে, জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার, সাভারে অবস্থিত জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেটের ইনচার্জ আব্দুর রহিম এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে কটুক্তি করে বক্তব্য প্রদান করেছে বক্তারা।

শীর্ষ সন্ত্রাসী পাভেল আহমেদের উল্লেখযোগ্য অনুসারীরা হলেন, বাহাদুর ইমতিয়াজ, হারুন অর রশিদ, ইজ্জত আলী, বশির উল্লাহসহ শাহ আলম ওরফে শাহা প্রমুখ।

ব্যানারে তারা ভয়ংকর কটুক্তি করে লিখেছেন, জাতীয় অন্ধ সংস্থার দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতির পাভেল আহমেদ সহ সকলের নামে ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর, করতে হবে। অপর ব্যানারে তারা লিখেছেন, আইয়ুব আলী ও জঙ্গি রহিম সন্ত্রাসী খুনি বাহিনীর হাত থেকে জাতীয় অন্ধ সংস্থা মার্কেট মুক্ত চাই। সন্ত্রাসী বাহিনীর বিচার চাই। এছাড়াও বক্তব্যে পুলিশের বিরুদ্ধে কটুক্তি করে কথা বলেন উপস্থিত বক্তারা।

এদিকে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের নাম ব্যবহার করে ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীকে হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেফতার হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী পাভেল আহমেদ এর পক্ষে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ সম্মানিত মানুষদের বিরুদ্ধে মানহানীকর শব্দচয়ন করায় শীর্ষ সন্ত্রাসী পাভেল আহমেদের অনুসারীদের আয়োজিত মানববন্ধনের প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা কর্তৃপক্ষ।

কতৃপক্ষ অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা সমাজসেবা অধিদপ্তরের স্বেচ্ছাসেবী সমাজ কল্যাণ সংস্থা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ শাখার নিবন্ধিত একটি সংগঠন। এই সংগঠনের মোট ভোটার সংখ্যা ১৮১ জন। সারাদেশের জেলা ভিত্তিক ভোটার সংখ্যা ১২৬ জন এবং ঢাকা মহানগরের ভোটার সংখ্যা ৫৫ জন। জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত ১৬ জন সদস্য রয়েছে। তারা হলেন, জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার চেয়ারম্যান মো: নুরুল আলম সিদ্দিক , মহাসচিব মো: আইয়ুব আলী হাওলাদার। এছাড়াও কার্যনির্বাহী পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: মকলেচুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মাধব চন্দ্র সরকার , যুগ্ম মহাসচিব এস এম ইউনুসুর রহমান, সহকারী মহাসচিব মো: মনিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সচিব আবু আলেম মাতবর, মহিলা বিষয়ক সচিব সাফিয়া বেগম, কার্যনির্বাহী সদস্য মোছা: নারগিস ইসলাম, গফফার হোসেন, মোঃ রিপন, মো: আলী, মিলন আক্তার, মাসুদ আনোয়ার খান, মোঃ আনোয়ার দেওয়ান ও নাদিরা বেগম। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন বানচাল করতে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ৯ এর (ক), ১২ এর (ক) এবং (খ) ধারাকে উপেক্ষা করে এই সংগঠনের সদস্য নয় এমন ভুঁইফোড় ব্যক্তি পাভেল আহমেদ বাহিনীর সদস্য মিনহাজ উদ্দিন ও হারুন অর রশিদ জাতীয় অন্ধ সংস্থার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দফায় দফায় তিনটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। শুনানি শেষে তাদের দায়ের করা রিট খারিজ করে দেন মহামান্য আদালত।

আইনি লড়াইয়ে ব্যার্থ হয়ে সাভারের স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়া ব্যবহার করে গত কয়েকদিন যাবত জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেট দখলের পায়তারা চালিয়ে আসছে শীর্ষ সন্ত্রাসী পাভেল আহমেদ সহ তার সহযোগীরা। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় তলায় ভাড়া পরিশোধ না করে ৩৮ নং দোকান এবং তৃতীয় তলায় একটি দোকান অফিস কক্ষ বানিয়ে দখল করে রেখেছে পাভেল আহমেদ বাহিনী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমাজসেবা অধিদপ্তর ঢাকার স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ শাখার উপ-পরিচালক এবং আগামী নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইয়ুব খান।

এর আগে রবিবার (২২ জানুয়ারি ) সন্ধ্যা এবং রাতে দুই দফায় চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ী মোঃ হাসান কে মারধর ও হত্যা চেষ্টা চালায় পাভেল আহমেদ সহ তার বাহিনীর সদস্যরা। পরে ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাই মহব্বত আলী বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশি তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মামলা দায়েরের পর (মামলা নং ৭৫) পাভেল আহমেদকে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় সাভার মডেল থানা পুলিশ।

আদালত পাভেলের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এক সপ্তাহ পর পাভেল আহমেদের আইনজীবী পুনরায় জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে শর্তসাপেক্ষে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩ টায় জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রাবেয়া বেগমের আদালত। পরের দিন শুক্রবার সকালে কারাগার থেকে মুক্তি পায় পাভেল আহমেদ।

অভিযোগ রয়েছে জামিন পেয়ে পুনরায় সাভারের জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেটে অনুসারীদের নিয়ে মহড়া দিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে মানববন্ধনের ঘোষণা দেন পাভেল আহমেদ।

বিষয়টি জানতে পেরে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সাভার মডেল থানায় জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মহাসচিব মোঃ আইয়ুব আলী হাওলাদার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর একদিন পর বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নিজের কদর বাড়ানোর জন্য পাভেল আহমেদ এর নির্দেশে বুধবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে ভাড়াটে লোক দিয়ে অনুসারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

মানববন্ধনে আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করার যৌক্তিকতা ও আইনি বিষয়ে জানতে চাইলে লিগ্যাল সলিউশন চেম্বারের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল বলেন, কোন ব্যক্তি যদি অন্য কোন ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে বা তার খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট হবে বলে জানা সত্ত্বেও বা তার বিশ্বাস করার কারণ থাকা সত্ত্বেও কথিত বা পঠিত হওয়ার জন্য অভিপ্রেত কথা বা চিহ্ন কর্তৃক বা দৃশ্যমান কল্পমূর্তির সাহায্যে সে ব্যক্তি সম্পর্কিত কোন নিন্দাবাদ প্রণয়ন বা প্রকাশ করে, তবে নিম্নে নির্দেশিত ব্যতিক্রমসমূহ ছাড়াই অন্যান্য ক্ষেত্রে, সে ব্যক্তি উক্ত অন্য ব্যক্তির মানহানি করে বলে পরিগণিত হয়। উক্ত অপরাধের শাস্তি পরের ধারায় তথা ৫০০ ধারায় বলা আছে যে- কোন ব্যক্তি যদি অন্য কোন ব্যক্তির মানহানি করে, তবে উক্ত ব্যক্তি দুই বৎসর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থ দণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ পাভেল আহমেদ (৩৮) সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার পুকুরপার গ্রামের হেফজু মিয়ার ছেলে। সে দীর্ঘদিন যাবত সাভার পৌরসভার শাহীবাগ এলাকায় থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন সাভার প্রেসক্লাবে ঢুকে সিনিয়র সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতসহ হামলা ও ভাঙচুর চালায়, একাধিক সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীকে হত্যা চেষ্টা, প্রকাশ্যে মাদক সিন্ডিকেট পরিচালনা, অন্যের ফ্ল্যাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে মোট ৫ টি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক জিডি ও অভিযোগ রয়েছে।

জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মহাসচিব মো: আইয়ুব আলী হাওলাদার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। সার্বিক বিষয় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেটের অবৈধ দখলকারী যেই হোক আইন অনুযায়ী পুলিশ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানা যায়, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির নির্দেশে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুসন্ধান পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে আগামী ১০ দিনের মধ্যে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বা বু ম/ এস আর

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪