1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ইউক্রেন-ইসরায়েলের সহায়তা বিলে বাইডেনের স্বাক্ষর আবারও সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা-বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর সম্পন্ন চলমান যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ব নেতাদের নিকট প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ-ওবায়দুল কাদের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর আজ ২ মাসের মধ্যে বেনজীরের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ৩ বগি লাইনচ্যুত র‌্যাবের নয়া মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড গমন

সাভারে সরকারি বাজেয়াপ্ত সম্পদ লুট করছেন জনপ্রতিনিধিরা

  • সময় : শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচিত হলমার্ক গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাজার কোটি টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হলেও তা দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণে সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি সরকারি কোনো দপ্তরকে। আর এ সুযোগে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ও ভরারী এলাকায় হলমার্ক গ্রুপের বন্ধ থাকা বিভিন্ন কারখানার জমিসহ অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি লুট হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে হলমার্কের এসব কারখানার অনেক দামি দামি যন্ত্রপাতি, ছাউনি, দরজা, জানালা এমনকি মূল ফটক পর্যন্ত লুট হয়ে গেছে। মালামাল লুটের পর বর্তমানে কারখানাগুলোর ভবন ভেঙে জমি দখলের মাধ্যমে সেগুলো প্লট আকারে বিক্রির চেষ্টা শুরু করেছে জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতাসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

আর এসব কাজ স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনে ঘটলেও বাধা দেওয়ার কেউ নেই। কোনো প্রকার বাধা না আসায় অনেকটা নির্বিঘ্নেই চলছে বেদখল কার্যক্রম।

সাভার উপজেলা প্রশাসন বলছে, হলমার্ক গ্রুপের সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হলেও তা দেখভালের বিষয়ে তাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রীয় সম্পদ যদি কেউ চুরি করে কিংবা দখলের চেষ্টা চালায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সম্প্রতি তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের নগরচর এলাকায় হলমার্কের তারকাঁটা কারখানা নামে পরিচিত ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে শাহাদাত হোসেন নামে এক ব্যক্তি। সিএস ৩৮৩, এসএ ২১৩, আরএস ১০৫ নম্বর খতিয়ানে সিএস ও এসএ ১৭৬ এবং আরএস ১৬৪ নম্বর দাগে ২ একর ৪৯ শতাংশ জমিটিতে মিসেস নিলুফা হক ওরফে রুনুর নামে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। পাশেই লাগানো আরও কয়েকটি সাইনবোর্ডে ওই জমির ৯২ শতাংশের মালিক বায়নাসূত্রে মো. শাহাদাত হোসেন গং লেখা রয়েছে। ১৫-২০ শ্রমিক লাগিয়ে কয়েক দিন আগে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। এর আগেই সেখানে থাকা বড় একটি জেনারেটর, তারকাঁটা তৈরির বেশ কিছু যন্ত্রপাতি, তারকাঁটা তৈরির জন্য রাখা বিপুল পরিমাণ লোহা ও রড, ভবনটির জানালা, দরজা, বৈদ্যুতিক পাখা ও বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্রসহ বিশালাকৃতির মূল ফটক লুট করা হয়।

এখন ভবনটি ভেঙে প্লট আকারে জমি বিক্রির চেষ্টা চলছে।

এ প্রসঙ্গে হলমার্ক গ্রুপের এবিএস নিটেক্স লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপক (অর্থ) মো. মোবারক হোসেন রাজু বলেন, ‘সাত-আট বছর আগে হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদ তারকাঁটা কারখানাটি কেনেন। এরপর থেকেই এটি আমাদের দখলে রয়েছে। তবে বর্তমানে গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগারে থাকায় রাতের আঁধারে কারখানার সব মালামালসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চুরি হয়ে গেছে। ভবনটির মালিকানা দাবি করে এটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে শাহাদাত হোসেন গং। আমরা বাধা দিয়েছি এবং বলেছি আপনাদের কী কাগজ আছে নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসেন। আমাদেরও কাগজ আছে, একসঙ্গে বসলেই সঠিক মালিকানা জানা যাবে। কিন্তু তারা আমাদের পাত্তা না দিয়ে কাজ অব্যাহত রেখেছে। তাই আমরা বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করেছি। ’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বায়নাসূত্রে জমির মালিকানা দাবিকারী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জমির মূল মালিক মিসেস নিলুফা হক। তার জমিটি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করেছিল তারকাঁটা কারখানার মালিক স্বপন। তাদের কাছ থেকে পরে হলমার্ক গ্রুপ কিনে দখলে নেয়। আদালতের রায়ে জাল দলিল প্রমাণিত হওয়ায় মূল মালিকের কাছ থেকে আমরা কয়েকজন মিলে জমিটি বায়না করে ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেছি। ’

এদিকে হলমার্ক গ্রুপের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এসআই সায়েদ ঘটনাস্থলে গত বৃহস্পতিবার গিয়ে ভবনটি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় উভয়পক্ষকে জমির কাগজ নিয়ে ফাঁড়িতে গিয়ে আলোচনায় বসার জন্য বলা হয়। ভবন ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার সময় স্থানীয় বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘হলমার্ক গ্রুপের অভিযোগের ভিত্তিতে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কাগজপত্র দেখে মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার পরই সেখানে কাজ করতে পারবে প্রকৃত মালিক। ’

এই তারকাঁটা কারখানা ছাড়াও সম্প্রতি তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নে হলমার্ক গ্রুপের হলমার্ক ফ্যাশন, হলমার্ক ডিজাইন ওয়্যার, ওয়াল মাট ফ্যাশন, ইসলাম ফ্যাশন, ডন অ্যাপারেল, ফারহান ফ্যাশন, মাহমুদ অ্যাপারেল, হলমার্ক স্পিনিং, ববি ফ্যাশন, হলমার্ক ডেনিম কম্পোজিট, ববি ফ্লাট বেড প্রিন্টিং, হলমার্ক এক্সেসরিজ, হলমার্ক নিট কম্পোজিট, ববি ডেনিম কম্পোজিট, হলমার্ক স্টাইল, পারফেক্ট এমব্রয়ডারি, হলমার্ক প্যাকেজিং, জিসান নিট কম্পোজিট, হলমার্ক নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, আনোয়ার স্পিনিং ও ম্যাক্স স্পিনিংসহ বিভিন্ন কারখানা ঘুরে দেখেন এ প্রতিবেদক। প্রায় প্রতিটি কারখানার স্থাপনা ধসে পড়ছে। কিছু কারখানার শেড (ছাউনি) ভেঙে পড়েছে এবং সেখানে থাকা কোটি কোটি টাকা দামের যন্ত্রপাতি উধাও হয়ে গেছে। দরজা, জানালা এমনকি মূল ফটকও নেই অনেক কারখানায়। হলমার্ক গ্রুপের শত শত কোটি টাকা দামের এসব কারখানা ছাড়াও জমির ওপর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা দামের নির্মাণাধীন ভবন ছিল। নির্মাণাধীন ভবনগুলো এখন পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের নিরাপদ আখড়ায়। কোনো কোনো স্থাপনা স্থানীয় ইউপি সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীরা ভোগদখল করে খাচ্ছে।

হলমার্ক গ্রুপের বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পদ দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘হলমার্ক গ্রুপের সব সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হলেও এসব বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রীয় সম্পদ যদি কেউ চুরি করে কিংবা দখলের চেষ্টা চালায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। ’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪