কুবি প্রতিনিধি:কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের বসন্তপুর নামক গ্রামে প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন আবিষ্কার করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একদল শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা হলেন ১৩ তম আর্বতনের রাকিব মোল্লা, জাবেদ ওমর জিদান ও শরীফা ইসলাম নিশাত এবং ১৪ তম আর্বতনের সজীব আহম্মেদ রিমন, মোফাজ্জল হোসাইন মুজাহিদ, আবদুল্লাহ আল কাউসার ও ইসরাত জাহান যেদনি।
গত ১৫ই ফেব্রুয়ারী ( মঙ্গলবার ) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান-এর নেতৃত্বে প্রত্নতত্ত্বের একদল শিক্ষার্থী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসন্ধানের জন্য পাঁচথুবি ইউনিয়নে যায় এবং এই প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন আবিষ্কার করে।
আবিষ্কৃত প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন সম্পর্কে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান বলেন, বর্তমান অনুসন্ধানে পাঁচথুবির বসন্তপুর গ্রামে ইট নির্মিত একটি প্রাচীন স্থাপনা আবিষ্কার করেছি আমরা। সারফেস স্ক্র্যাপিং করে আমরা একটি স্থাপত্যের তিনটি বাহুর চিহ্ন সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। স্থাপত্যে ২৫ বর্গ সেন্টিমিটার আকৃতির বর্গাকৃতির ইট ব্যবহার করা হয়েছে। স্থাপত্যটির ব্যবহার ও ধরন সুনির্দিষ্টভাবে বোঝা না গেলেও এটি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে, স্থাপত্যটি একটি বড় স্থাপত্য কমপ্লেক্স এর অংশ।
তিনি বলেন, প্রত্নস্থল সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের সঠিক ধারণা না থাকা এবং অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির কারণে বা বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রত্নস্থলের মাটি কেটে নেওয়া এবং প্রত্নস্থলে বৃক্ষ রোপণের ফলে কালের সাক্ষী গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থলগুলো ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রত্নস্থানের সুরক্ষায় প্রয়োজন স্থানীয় জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি জন সম্পৃক্ততা। এর জন্য আমরা গবেষণা এলাকায় জন প্রত্নতাত্ত্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আবিষ্কৃত প্রত্নস্থলসমূহের সুরক্ষায় চিহ্নিত প্রত্নস্থানসমূহকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ভূমিকা গ্রহণ জরুরী। নতুন আবিষ্কৃত প্রত্নস্থল এবং এর সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আমরা ইতোমধ্যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে পত্র প্রেরণ করেছি।
উল্লেখ্য, স্থানীয় মানুষ ঐ স্থানটিকে বসন্ত রাজার বাড়ি বলে থাকে। তাদের ধারণা বসন্ত রাজার রাজত্ব থেকেই হয়ত গ্রামের নাম বসন্তপুর হয়েছে। এছাড়াও শালবন বিহারে প্রাপ্ত আনন্দদেবের তাম্রশাসনে বসন্তপুরে অস্থায়ী রাজধানী স্থাপনের উল্লেখ রয়েছে। তবে এখনও সুস্পষ্ট নয় যে এই বসন্তপুরই সেই বসন্তপুর। এর জন্য প্রয়োজন বিস্তৃত পরিসরে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা।