শিশির খাঁন, সদরপুর:
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম তার ব্যাংক হিসাবে গচ্ছিত ঘুসের টাকা স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন। বলছেন, ওই টাকা পরিবারের সদস্যদের। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো-ইউপি নির্বাচন চলাকালে তিনি প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। কয়েক প্রার্থীর অভিযোগটির তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত কর্মকর্তারা হলেন, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব (সংস্থাপন-১) জিলহাজ উদ্দিন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।
তারা উপজেলা নির্বাচন অফিসারের ব্যাংক হিসাব তলব করে সোনালী ব্যাংক, উপজেলা শাখায় সাইফুল ইসলামের হিসাবে প্রায় চব্বিশ লাখ টাকা গচ্ছিত পেয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তারা ওই টাকার উৎস জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। জবাবে নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম চব্বিশ লাখ টাকাই তার পারিবারিক লেনদেনের অর্থ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জানা যায়, ঘুসের টাকা জব্দ হওয়ার ভয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা ৬ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকে গচ্ছিত চব্বিশ লাখ টাকার মধ্যে বিশ লাখ টাকা তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমের ব্যাংক হিসাবে ট্রান্সফার করেন।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সাইফুল ইসলামের সোনালী ব্যাংক শাখার হিসাব নম্বরটি হচ্ছে ২০০৯৯০১০১৪৪৫৭। এ হিসাবে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিক থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন দফায় প্রায় চব্বিশ লাখ টাকা জমা করা হয়েছে। ইউপি নির্বাচন চলাকালে দেড় লাখ, দুই লাখ বা এক লাখ টাকা করে ওই হিসাবে অর্থ জমা রাখা হয়েছে। এক লাখ বা আশি হাজারের মতো ছোট অংকের ঘুসের টাকা নির্বাচন অফিসের কর্মচারী দিয়ে ব্যাংক জমা করেছেন। দুই লাখ বা আড়াই লাখের মতো বড় অঙ্ক তিনি নিজেই জমা দেন।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার শ্বশুর আমার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল। সেই পাওনা টাকা আমাকে ফেরত দিলে তা ব্যাংকে জমা করি। পরে আবার আমার স্ত্রীর হিসাবে ট্রান্সফার করেছি। তিনি আরও বলেন, আমার ব্যাংক হিসাবের খবর সাংবাদিকরা জানল কীভাবে? আমি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ইলিগেশন দেব।’