সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান নিহতের ঘটনার বিচারের দাবিতে রাজধানীর মতিঝিল ও গুলিস্তান এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।গতকাল বুধবারও গুলিস্তানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা।আজ বৃহস্পতিবার গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে জিরো পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেন তাঁরা।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সড়কে পিষে নাঈমকে হত্যা করা হয়েছে, আগামীকাল আমাকে হত্যা করা হবে। সুতরাং, সড়কে শৃঙ্খলা দরকার। এভাবে চলতে পারে না। হত্যাকারীকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
নাঈমের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধকালে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা।
এ বিষয়ে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শাদ বলেন, ‘আমাদের বন্ধু নাঈমকে হত্যার বিচার ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবে না।’গতকাল বুধবার গুলিস্তানে অবরোধে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘নাঈম আমার বন্ধু। একসঙ্গে পড়তাম। বুধবার সকালে আমাদের ক্লাস ছিল। ক্লাস শেষ হওয়ার পর নাঈম বাসায় ফিরছিল। সে সময় এ ঘটনা ঘটে। সত্যিই এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। নাঈমের বাবা-মা পাগলের মতো হয়ে গেছে সন্তানশোকে। একবার ভাবুন, সরকারি একটি গাড়ি আমার বন্ধুর প্রাণ কেড়ে নিল। সরকারের কাছেই আমাদের নিরাপত্তা নাই। কোথায় যাব আমরা? কার কাছে বিচার চাইব?’
নাঈম হত্যার প্রতিবাদে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ অবরোধ ও বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। যেন এভাবে আর কারও প্রাণ সড়কে না ঝরে। কোনো মায়ের কোল যেন খালি না হয়। এভাবে যেন মেধাবী কোনো শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু না হয়।
গতকাল বুধবার বেলা ১২টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় নাঈম হাসানের। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ি নাঈমকে চাপা দেয়। তারপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল সকালে গুলিস্তানে অবস্থিত সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুর রহমান বলেছিলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি নাঈমকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কিন্তু, তার ২০ মিনিট পর জানতে পারি তিনি মারা গেছেন। হয়তো সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে, চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই ময়লার গাড়িটির চালক রাসেলকে আটক করা হয়েছে। গাড়িটিও জব্দ করে পল্টন থানায় রাখা হয়েছে।’