কাজী নাফিস ফুয়াদ ,মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দিনদিন বেড়েই চলছে ভুয়া সাংবাদিকের সংখ্যা। এ সব ভুয়া সাংবাদিকের কারনে অনেক পেশাদার সাংবাদিক সরে যাচ্ছেন বলে জানাযায়।উপজেলায় কোথাও কোন ঘটনার সংবাদ শুনলে বা কেউ কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে ছুটে যায় ভূয়া সাংবাদিকেরা। তাদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে করে হয়রানী। নিজেরা প্রাথমিকের গন্ডি না পেরিলেও দাপটের সাথে গলায় নাম সর্বস্থ অনলাইন পোর্টালের কার্ড ঝুলিয়ে প্রতারনা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।সরেজমিন,পুলিশ ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়,কালকিনি উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বনগ্রামের নুর ইসলাম সিকদারের ছেলে মোঃ আজাদ সিকদার দীর্ঘদিন ধরে ঘোসেরহাট বাজারে মুদি দোকান দিয়ে পাইকারি ব্যবসা করে আসছে। গত কিছুদিন আগে বাজারে দোকানদারী করা নিয়ে বাজার কমিটির সাথে একটি ঝামেলা চলছিল। আর এ সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ছুটে যান (ভুয়া)ক্রাইম পেট্রোল অনলাইন পোটাল পরিচয় দেয়া সাংবাদিক১) মোঃ সেলিম বাইন্না(কামাল হোসেন) পিতা মোতালেব বাইন্না, ২)মোঃ মানিক (আরজু)মোল্লা, ৩)মোঃ শাহাদাত (পাভেল)মোল্লা পিতা মোঃ জালাল মোল্লা। উভয় গ্রাম গোপালপুর। তারা দোকানদার আজাদ সিকদারকে বলেন,আমরা আপনার বিষয়টি শুনেছি। বাজার কমিটি কখনও দোকান সরাতে পারবেনা।যদি বাজার থেকে সরাতে হয় তাহলে আপনাকে আপনাকে ক্ষতিপুন স্বরুপ ১০ লক্ষ টাকা আদায় করে দিব। বিনিময় আমাদের ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। সরল মনে দোকান আজাদ সিকদার তাদেরকে প্রথমে ২২ হাজার টাকা দেয় এবং বাকি টাকা কাজ হলে দিবে। পরে টাকা নিয়ে তাৎক্ষনিক স্থান ত্যাগ করেন ক্রাইম পেট্রোল পরিচয় ভুয়া সাংবাদিক চক্র।এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ থাকে,মাঝে মধ্যে অন থাকলেও রিসিপ করেনা মোবাইল।পরে এ ঘটনায় দোকানদার ব্যবসায়ী আজাদ সিকদার ডাসার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।সেলিম বাইন্না(কামাল হোসেন)সেনাবাহিনীতে এবং মানিক ওরোফে আরজু মোল্লা পুলিশে চাকুরি করে ছিলেন।অন্য দিকে এ চক্রটি আরও কিছু লোক নিয়ে মানব পাচারের ব্যবসা করে আসছে বলে ডাসার থানায় দায়েরকৃত আরেক মামলায় জানাযায়।কাজীবাকাই ইউনিয়নের দক্ষিন মাইজপাড়া গ্রামের রাশিদা বেগম স্বামী নাজেম মাতুবাবর গত ১৩/১১/২০ইং তারিখ ১)মোঃ মাহাউদ্দিন শেখ,২)মোঃ শাহউদ্দিন শেখ,উভয় পিতা সুলতান শেখ। ৩)মোঃ সবে মোল্লা পিতা মনু মোল্লা সর্ব সাং দক্ষিন মাইজপাড়া। ৪) পাভেল(শাহাদাত)মোল্লা পিতা জালাল মোল্লা(ক্রাইম পেট্রোল সাংবাদিক) বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।ভুক্তভোগী রাশিদা বেগম বলেন,এ চক্রটি আমার ছেলেকে অনেক টাকা বেতনে সৌদিআরবে নিয়ে ভাল চাকুরি দিবে বলে বিদেশ পাঠান। কিন্তু তারা ওখানে আমার ছেলেকে নিয়ে মাফিয়াদের হাতে তুলে দেন। ছেলেকে তারা নির্যাতন করে আরও টাকার জন্য। পরে দায়ের কৃত মামলায় একজন আসামী গ্রেফতার হয়ে প্রায় দেড় মাস জেলহাজতে থেকে জামিনে আসে। জামিনে এসে আসামীরা আমাকে উক্ত মামলা তুলে নিতে হুমকি প্রদান করে আসছে। আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবই আতন্কে আছি।সচেতন মহল মনে করে এসব ভূয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রকৃত সাংবাদিকেরা তাদের পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অবিলম্বে এসব ভূয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন। কিছু অপেশাদার অনভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক সাংবাদিক নাম ধারন করে সামান্য টাকার বিনিময়ে কিছু সম্পাদক নামধারী প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকা,ফেইসবুক টিভি খুলে সাংবাদিকরা এসব ভূয়া সাংবাদিক তৈরী করছে এবং সম্পাদক সেজে ১০০০/২০০০টাকা নিয়ে কার্ড দিচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে কালকিনিতে ভুয়া সাংবাদিকদের উৎপাতে দিন দিন বেড়েই চলছে। এসব পরিচয়পত্র কার্ড গলায় ঝুলিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষকে ঠকিয়ে জীবন জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছে। ভূয়া সাংবাদিকেরা এভাবে চলতে থাকলে সাংবাদিক সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। এদেরকে খুঁজে বের করে সাংবাদিক সমাজ থেকে বিতাড়িত না করলে দেশ ও সামাজের উন্নয়ন কাজ বারবার বাধাগ্রস্থ হবে বলে মনে করছেন সূশীল সমাজ ও প্রকৃত সাংবাদিক মহল।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কারি মোঃ মানিক ওরোফে আরজু(ক্রাইম পেট্রোল)পরিচয় ভুয়া সাংবাদিক বলেন, আমি দোকান ব্যবসায়ী মোঃ আজাদ সিকদারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি।ডাসার থানার এএসআই মোঃ আলি হোসেন বলেন,আসামীদের ধরার অভিযান চলছে,তাদের এলাকায় পাওয়া যায়নি।এ ব্যাপারে ডাসার থানার ওসি মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, এঘটনায় থানায় মামলা হয়েছিল,একজন আসামীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরন করেছি। আসামী জামিনে এসে মামলার বাদিকে হুমকি দিচ্ছে বলে বাদি থানায় অভিযোগ করেছে। আমরা বিষটি তদন্ত করে দেখছি।