1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন

উজিপুরে স্ত্রীকে নির্যাতন করায় পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা

  • সময় : বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০
  • ৩৭০

স্ত্রীকে নির্যাতন করায় এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বরিশাল উজিরপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতিত স্ত্রী’র মা মঞ্জু বেগম বাদী হয়ে গত ১৪ জুন উজিরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি করেন। ঘটনার সূত্রে জানা যায়, কনস্টেবল শিবলী বিশ্বাস ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় কর্মরত রয়েছে এবং কিছুদিন পূর্বে ছুটিতে নিজ বাড়ি উজিরপুর সাতলায় আসে। স্ত্রী হেরা বরিশাল বাবার বাসা থেকে ১৩ জুন তার সাথে দেখা করতে শ্বশুরবাড়ি উজিরপুর সাতলায় যায়। সেখানে যাওয়ার পর স্ত্রী হেরার নিকট সংসার খরচের টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কনস্টেবল শিবলী ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে তার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।

নির্যাতনের এক পর্যায়ে শিবলীর বাবা আলতাফ বিশ্বাস পুত্রবধূ হেরার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। হেরার প্রবাসী পিতা ঘটনাটি জানতে পেরে উজিরপুর থানা পুলিশকে অবগত করলে, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এবং ওইদিনই উজিরপুর থানার ওসি নির্যাতিত গৃহবধূকে উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠান। উজিরপুর থানা পুলিশ নির্যাতনের ঘটনাটি মামলার বাদী মঞ্জু বেগম (হেরার মা) কে জানালে তিনি বরিশাল থেকে উজিরপুর গিয়ে তার মেয়ে হেরাকে সু-চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিয়ে আসেন এবং শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।

পরদিন উজিরপুর থানায় পুলিশ কনস্টেবল শিবলী ও তার পরিবারের বাবা, মা ও দুই ভাইকে আসামি করে হেরার মা মঞ্জু বেগম একটি মামলা দায়ের করেন। উজিরপুর থানার ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, গত ১৩ জুন দক্ষিন সাতলা আলতাফ বিশ্বাসের বাড়ি থেকে হেরা নামের এক গৃহবধূকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি এবং চিকিৎসার জন্য উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। পরবর্তীতে নির্যাতিত গৃহবধূর মা মঞ্জু বেগম পুলিশ কনস্টেবল শিবলী ও তার পরিবারের বাবা, মা ও দুই ভাইর বিরুদ্ধে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি আইনগত প্রক্রিয়াধীন আছে। এদিকে নির্যাতিত গৃহবধূর মা মঞ্জু বেগম বলেন, গত চার বছর আগে শিবলী আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে বিভিন্ন অযুহাতে মারধর করত। শিবলী আমার মেয়েকে নিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি ভাড়া বাসায় থাকে।

সেখানে বাসা ভাড়া ও যাবতীয় খরচসহ প্রতিমাসে ত্রিশ হাজার টাকা আমার মেয়ের ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দিতাম। টাকা না দিলেই আমার মেয়ের উপর নির্যাতন চালাত এবং তালাকের হুমকি দিত। তাই মেয়ের সুখের জন্য প্রতিমাসেই টাকা পাঠাতাম। কিন্তু গত মে মাসে আমার স্বামী করোনা মহামারির জন্য বিদেশ থেকে আমাদের টাকা পাঠাতে পারে নাই, তাই মেয়েকে গত মে মাসের টাকা দিতে পারি নাই। টাকা দিতে না পারায় শিবলী আমার মেয়েকে মারধর করে ঢাকা থেকে পাঠিয়ে দেয়। আমার মেয়ে হেরা চলতি মাসের ২ তারিখ ঢাকা থেকে বরিশাল আমার বাসায় চলে আসে। এরপরও শিবলী টাকার জন্য আমার মেয়েকে মোবাইলে চাপ দিতে থাকে। টাকা না পেলে আমার মেয়েকে তালাক দিবে বলে হুমকি দেয়। উপায়ন্ত না পেয়ে আমার মেয়ে ১৩ জুন শিবলীর বাড়ি উজিরপুর সাতলায় দেখা করতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর শিবলী ও তার পরিবারের সবাই মিলে আমার মেয়েকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। পরে আমার স্বামী সৌদিআরব থেকে উজিরপুর পুলিশকে ফোন দিলে তারা আমার মেয়েকে উদ্ধার করে। এখন আমার মেয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি শিবলী ও তার পিতার গুরুতর শাস্তির দাবী জানাই। এদিকে নির্যাতিত গৃহবধূ বলেন, আমার স্বামী একজন দু:চরিত্র লোক। আমি বাসায় না থাকলেই মেয়ে মানুষ এনে ফুর্তি করত। অনেকবার তাকে হাতেনাতে ধরেছি। এছাড়াও সে টাকার জন্য প্রতিনিয়ত আমাকে শাররিক ও মানসিক নির্যাতন করত। আমার একটি দেড় বছরের মেয়ে রয়েছে। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে এতদিন আমি সব সহ্য করেছি। প্রতিমাসেই আমার মা আমাকে সংসার খরচের জন্য টাকা পাঠাত। তারপরও আমাকে মারতে মারতে শেষ করে ফেলেছে। আমি প্রশাসনের কাছে ওর বিচার চাই।


এ ব্যাপারে বরিশাল পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের ঘটনাটির ব্যাপারে আমি অবগত আছি। পুলিশ বাহিনীর যেই আপরাধ করুক ছাড় পাবেনা। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পাশাপাশি মামলা তার আইনগত নিয়মানুসারে চলবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪