যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চলছে।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুলিশ মাঝে মধ্যে ২/১ জন খুচরা ব্যবসায়ী আটক করলেওগডফাদাররা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে চুড়ামনকাটির রেলস্টেশন রোড, হঠাৎ পাড়া, বাগডাঙ্গা বাবু বাজার, পালপাড়া মোড়, সাতমাইল বাজার সংলগ্ন রেললাইনএলাকা, নওয়াদাঁগা শ্যানগর মোড়ে সন্ধ্যার পর থেকে মাদকের হাট বসছে বলে এলাকাবাসীজানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রকাশ্যে ফেনসিডিল ও ইয়াবাবিক্রি করছে চুড়ামনকাটি রেলস্টেশন এলাকার হঠাৎ পাড়ার আলম , শাহআলম , বাগডাঙ্গার কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী আন্নার দুই ছেলে রিপন ও বিল্লাল, গড়ে সিরাজ, নজরুল ইসলাম,সবুজ হোসেন , মনিরুল ওরফে মনি, তার ভাই হাকিম, রেজাউল, ,শরিফুল, মিজান, পিচ্ছি মাহাবুর ও আজিম, ছোট দৌগাছিয়ার গজো মশিয়ার ও তার স্ত্রীসুফিয়া খাতুন, আড়–য়া দৌগাছিয়ার মফিজুর , আমির হোসেন, সাজিয়ালী শ্যামনগরগ্রামের পাগলা আলা, ভাগলপুর গ্রামের আলিম, হৈবতপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামেররবিউল ইসলাম, সাতমাইল বাজারের আছির উদ্দিন তার দুই ছেলে সোহাগও সাদ্দাম, বড়হৈবতপুর গ্রামের সুমন, কাশিমপুর ইউনিয়নের নওয়াদাগাঁ গ্রামের শাহাজাহান ওআনোয়ারুল, ঘোনা গ্রামের রনি। এদের অধিকাংশেরই নিজস্ব মাদক সিন্ডিকেট রয়েছে।পাইকারী ও খুচরা মাদক বিক্রির জন্য সিন্ডিকেটে একাধিক সদস্য রয়েছে।
সুত্র জানায়, রিপন ও বিল্লালের নেতৃত্বে বাগডাঙ্গা পালপাড়া মোড় ও তার আশেপাশেরএলাকায় মাদকের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। ১৫ থেকে ১৬ জন এইসিন্ডিকেটের সদস্য ছিলো । বিগতদিনে তারা দুই ভাই পুলিশের হাতে একাধিকবার আটকহয়েছে। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসে মাদক সিন্ডিকেট সক্রিয় করে। গজো মশিয়ার ও তার স্ত্রীসুফিয়া বাদামতলা মোড়ে অবস্থান নিয়ে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। ইতিপূর্বে গজো মশিয়ারমাদকদ্রব্যসহ একাধিকবার পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। তবুও তার অবৈধ ব্যবসা বন্ধহয়নি। বাদামতলা মোড় ছাড়াও তারা স্বামী স্ত্রী নিজ বাড়িতে ইয়াবা ও ফেনসিডিল বিক্রিকরছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সূত্র জানায়,
বিগত দিনে মাদকদ্রব্য অধিদফতর একটি টিম কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামেরমথুরাপুরাস্থ গ্রামের বাড়ি ও সাতমাইল বাজারে ডেরায় অভিযান চালায়। এ সময় রবিউলপালিয়ে যায়। তার ডেরা থেকে ৪শ’ পিস ইয়াবা, দুটি ধারালো অস্ত্র ও পাঁচ রাউন্ড গুলিউদ্ধার হয়। কিন্তু কয়েক মাস পরে রবিউল পুলিশের হতে আটক হয়। স্থানীয়রাজানিয়েছেন, রবিউল জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো মাদকের ব্যবসা শুরু করেছে। রবিউলপালসার ব্যান্ডের মোটর সাইকেল করে সাতমাইল বাজারে ঘোরাঘুরি করে দেখে ব্যবসাকরতে তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা। সে এলাকয় পাইকার মাদকব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতমাইলের পিতা–পুত্র সিন্ডিকেটের মাদক ব্যবসা দীর্ঘদিন থেকেচলে আসছে। বিগত দিনে সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য সোহাগকে ২শ’ ৫০ গ্রাম গাঁজাসহসাতমাইল বাজার থেকে আটক করে। এরপর থেকে তার পিতা আছির উদ্দিন ও ভাইসাদ্দাম ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করতো। পরে জামিনে বেরিয়ে এসে সোহাগ ব্যবসা আরো জোরদারকরেছে। দীর্ঘদিন ধরে একই গতিতে ব্যবসা করে আসছে। অপর একটি সূত্র জানায়, বাগডাঙ্গা গ্রামের আক্তারুল হোসেনের ছেলে পিচ্ছি মাহাবুর নতুন করে ইয়াবার সিন্ডিকেটগঠন করেছে। মাহবুর ও সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাগডাঙ্গা বাবু বাজার, ঠাকুরপাড়া ওআশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে ইয়াবা বিক্রি করছে। দুই সপ্তাহ আগে সাজিয়ালীফাঁড়ি পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক কারবারী সুমনের বাড়ি অভিযান চালায়।এসসময় সুমন পালিয়ে যায়। পুলিশ সুমনের সহযোগী রিপনকে ১০ পিস ইয়াবাসহ আটককরে। সুত্র জানায়, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীচুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের আটকের দাবিজানিয়েছেন। সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির এস আই সুকুমার জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেরিপন নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ১০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। কিন্তু তারগডফাদার সুমন পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। এইসিন্ডিকেটের আরো কয়েকজন সদস্য আছে। তাদের বাড়ি চুড়ামনকাটি বাজার পাড়ায়।মাদকসহ তাদেরও আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এসআই সুকুমার আরো জানান, তিনিবরাবরই মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার। চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের মাদকব্যবসায়ীদের আটকে সব ধরণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।