বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) মাদকবিরোধী অভিযান কার্যত শিথিল করা হয়েছিল। সেই সুযোগে মাদকের বড় বড় চালান ঢুকে পড়েছে এই অঞ্চলে। পুলিশ জানিয়েছে, বছরের প্রথম তিনমাস জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মেট্রোপলিটন এলাকায় ২৭০টি মাদক নিরোধক আইনে মামলা হয়েছে। এ সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩৫৭ জন।
কিন্তু করোনার পিক-টাইম মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত চারমাসে মাদক নিরোধক আইনে মামলা হয়েছে ৫৯টি। গ্রেপ্তার হয়েছেন ৮৩ জন মাদক কারবারি। পুলিশ জানিয়েছে, করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করায় বড় চালান আটক হতে শুরু করেছে। বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে পাঁচজনকে আটক করেন পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল হালিম খন্দকার। এ সময় এক হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ই-মেইল বার্তায় গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম শামীম দাবি করেন, দুই স্থান থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়।
এর মধ্যে রূপাতলী ডোস্ট পাম্পের সামনে থেকে তিনজনকে এবং ৯নং ওয়ার্ডের পোর্ট রোডস্থ আনিচুজ্জামান খান কামালের মালিকানাধীন ভবন জনতা ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে থেকে দুইজনকে আটক করা হয়।
তবে আভিযানিক দলে থাকা এসআই দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, তিন স্থান থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে লঞ্চঘাট এলাকা থেকে দুইজন, রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একজন এবং শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাঝখানের গেট সংলগ্ন বান্দরোডের ওপর থেকে দুইজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে দুইজন ‘প্রেস’ লেখা মোটরসাইকেলে এসেছেন। তারা হলেন, বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের শাহাবুদ্দিন মৃধা সাজু ও মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৬নং ওয়ার্ডের সুমন হাওলাদার।
পুলিশ জানিয়েছে, চেকপোস্টে মোটরসাইকেল চেক করতে থামানো হলে তারা নিজেদের ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দিয়ে চলে আসতেন।
তাছাড়া গাড়ির সামনে ‘প্রেস’ লেখা থাকায় অনেক চেকপোস্টই নমনীয় নজরে দেখতো। সেই নমনীয়তাকে পুঁজি করে বড় বড় মাদকের চালান পটুয়াখালী ও বরগুনায় নিয়ে যেতেন তারা।
আটককৃত অন্য তিনজন হলেন, মির্জাগঞ্জ উপজেলার মনির হোসেন মৃধা, রিয়াজুল ইসলাম রাজিব ও জাহাঙ্গীর মৃধা। পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, একজনের কাছে ইয়াবা পাওয়া যায়।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরী থেকে অভিযান চালিয়ে বাকিদের আটক করা হয়। পুলিশের দাবি, মাদক কারবারিরা চেকপোস্ট অতিক্রমে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশ ধারণ করে থাকেন। সেই ছদ্মবেশ থেকে ‘সাংবাদিক’ পেশাটিও বাদ যাচ্ছে না।