ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দুই হাতের কব্জি ছাড়া হাতে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় ডাকা বোর্ড থেকে জিপিএ-৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক শিক্ষার্থী।
রাজধানীর সন্নিকটে সাভারের আশুলিয়ার গাজিরচট এলাকার হাজী মতিউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় হতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে পাশ করে জান্নাতুল ফেরদৌস।
জান্নাতুল ফেরদৌস কুমিল্লা জেলার চাটখিল উপজেলাধীন মানিকপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। সে তার পরিবারের সাথে আশুলিয়ার পল্লীবিদুৎ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে।
জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে জানা যায়, ‘ বাব-মায়ের একমাত্র সন্তান জান্নাতুল। বাবার সাথে মায়ের বিচ্ছেদ হওয়ায় মামা ও খালার সাথে ভাড়া বাসায় থেকে কোন মতে দিনপাড় হচ্ছে। যেহেতু মামা-খালার বাসায় থেকে তার পড়ালেখা, সেহেতু তাদের পক্ষে লেখাপড়ার অতিরিক্ত খরচ জোগান দেওয়া সম্ভব ছিল না। মা তাকে যথেষ্ট উৎসাহ দিয়ে অনেক কষ্ট করে ফরম পূরণের টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। টাকার অভাবে নানাভাবে বাঁধাগ্রস্ত হয়েছি। এখনো টাকা ছাড়া ভর্তি প্রায় অনিশ্চিত। তাই কলেজে ভর্তি ও লেখা পড়ার খরচ বহনের জন্য সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে এই শিক্ষার্থী। সকলের সহযোগিতা পেলে সাভার ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করবেন জান্নাতুল। পৌঁছে যেতে চায় তার স্বপ্নের সেই চেম্বারে। করতে চান মানুষের সেবা।
এ ব্যাপারে জান্নাতুল ফেরদৌসের মা নুলুফা বেগম জানান, তার মেয়ের পড়াশোনার প্রবল আগ্রহ। মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ বহন করা তার জন্য খুবই কষ্ট সাধ্য। জান্নাতুল ফেরদৌসের মা দেশবাসীর নিকট সাহায্য চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত যে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারী আশুলিয়ার নবীনগর এলাকার একটি ভাড়া বাসার ছাদে বিদ্যুৎ সঞ্চালক তারে জড়িয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস এর দুই হাত পুড়ে যায়। পরে জানুয়ারী মাসের ২৭ তারিখে তার হাতের কব্জিসহ কেটে ফেলা হয়।