স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারে, তার বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, সাহেদ বড় অন্যায় করেছেন, তার অপকর্মের ব্যাপারে ইতোমধ্যে র্যাব-পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
তাকে খোঁজা হচ্ছে, তিনি যেখানেই থাকুক, তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, নতুবা পুলিশ তাকে ধরে ফেলবে। আইন শৃংখলা বাহিনী শিগগির তাকে ধরতে সক্ষম হবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সাহেদ যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ রোববার ঈদুল আজহা উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভা শেষে এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, আইজিপি ড. বেনজির আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা,কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা ও চামড়া পাচার রোধকরণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সাহেদ যত বড় ক্ষমতাবানই হোন না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তার বিদেশ যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাহেদের সকল অপরাধ তদন্ত করা হচ্ছে, দ্রুত এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
সাহেদ কি ধরনের অন্যায় করেছে সেগুলো পুলিশ এবং র্যাব তদন্ত করছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে তার অন্যায়ের গভীরতাটা কতটুকু জানা যাবে। সাহেদ দেশে আছে নাকি বাইরে চলে গেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বাইরে যাওয়ারতো কোনো উপায় নাই।
তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে, বর্ডার যাতে ক্রশ করতে না পারে সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই তাকে ধরতে সক্ষম হবো’ । এসময় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ প্রসঙ্গে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, সকল তথ্যের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ‘সাহেদকে গ্রেফতারে সবধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’ সব তথ্যের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান আইজিপি।
সভায় পশুরহাট ও কোরবানির পশু পরিবহনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় জানানো হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পশুর হাটে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য একটি গাইড লাইন তৈরি করছে। এ গাইড লাইন বাস্তবায়নের জন্য আইন শৃংখলা বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ঢাকা শহরের বাহিরে পশুর হাট বসানোর জন্য ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি কর্পোরেশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সভায় জানানো হয়।
এ বছর কোরবানির পশু অনলাইন কেনাকাটার উপর সভায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কোরবানীর হাটের ইজারাদারদের হাটের প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা (বেসিনসহ) হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ক্রেতাদের মাস্ক পরিধান করে হাটে প্রবেশ করতে হবে। কোন ক্রেতা মাস্ক পড়ে না আসলে ইজারাদারদের নিকট সংরক্ষিত মাস্ক ক্রয় করে হাটে প্রবেশ করতে হবে। হাটের কাছে ব্যাংক বুথ থাকবে।
রাস্তাঘাটের উপর পশুর হাট দেয়া যাবে না। কোন হাটে যাবে পশুর ট্রাকের সামনে ব্যানারে হাটের নাম লেখা থাকবে। পশুর ট্রাক অন্য কোথাও থামানো যাবে না। পশুবাহী কোন গাড়ী রাস্তায় থামানো যাবে না। নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিবারের মতো এবারও জাল নোট, চাদাবাজি, অজ্ঞান-মলম পার্টি হতে নিরাপত্তা দিবে।
নদীপথে ফেরি, লঞ্চ ও জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা যাবেনা। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করলে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নদীপথে পশুবাহী ট্রলার যাতে অতিরিক্ত বোঝাই (ওভারলোড) না হয় সে ব্যাপারে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ লক্ষ্য রাখবে। পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ ও যথাযথভাবে বিপণনের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি অন্যান্য বারের চেয়ে কম সময়ের জন্য বন্ধ রাখা যেতে পারে। শ্রমিকদের বেতন বোনাস যথাসময়ে পরিশোধে বিজিএমইএ এবং কারখানা মালিকগণ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এবারের ঈদ-উল-আযহার জামায়াত মসজিদে আদায়ের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলেও সভায় জানানো হয়।