স্টাফ রিপোর্টার-
টেকনাফের বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ি সাবের হোসেন হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত ৬ আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। র্যাব-৩ এবং র্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযানে তাদেরকে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব বলছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই ব্যবসায়ী সাবের’কে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর থেকেই আসামীরা পলাতক ছিল।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মামলার পলাতক প্রধান আসামি ১। মোঃ ইয়াছিন (৩৫), মোঃ সালমান (২৭), আব্দুল্লাহ (৪৩), সোহাগ (৩২), বাবলু (২৮), আব্দুল জব্বার (৩১)। তারা সকলেই কক্সবাজার জেলার টেকনাফের জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে র্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার মো:শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত ব্যবসায়ী সাবেরে’র বড় ভাই সাদেক বাদী হয়ে গত ১৩ এপ্রিল টেকনাফ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের পরপরই আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
মামলার বিবরন ও গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, নিহত ভিকটিম সাবের টেকনাফ থানাধীন বার্মিজ মার্কেটে জুতার ব্যবসা করত। তার দোকানের সামনে গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি ইয়াছিনের একটি বন্ধ দোকান রয়েছে। গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন পূর্বশত্রুতার জেরে সাবেরের ব্যবসা শুরুর পর থেকেই তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে অহেতুক হয়রানি করে বেচা-বিক্রিতে ক্ষতিসাধন করে আসছিল। এ বিষয়ে ভিকটিম সাবের মার্কেটের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের জানালে গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন ও অন্যান্য আসামিরা সাবেরকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছিল।
তিনি আরও জানান, গত ২ এপ্রিল বিকেল ৫ টায় ভিকটিম সাবের নিজ দোকানের জায়গা সংকটের কারণে গ্রেফতারকৃত ইয়াছিনের বন্ধ থাকা দোকানটির সামনে একটি জুতার বস্তাসহ কয়েক জোড়া জুতা ঝুলিয়ে রাখে। এ নিয়ে গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন ভিকটিমকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকলে ভিকটিম প্রতিবাদ করায় তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন, সালমান, আব্দুল্লাহ, সোহাগ, বাবলু, জব্বার এবং পলাতক আসামি নুর হোছন, এমরান ও কেফায়েতসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন মিলে ধারালো টিপ ছুরি, রামদা, হাতুড়ি ও লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাবেরকে দোকান থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে তার উপর নৃশংস হামলা চালায়। গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন তার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে সাবেরের মাথায় আঘাত করলে সাবের মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপরও তারা লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে উপুর্যপরি আঘাত করতে থাকলে সাবের অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মার্কেটের লোকজন এবং মামলার বাদী সাবেরের ভাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সকল আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় সাবের কে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে গত ১০ এপ্রিল রাত ১১ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবের মৃত্যুবরণ করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের ওই কর্মকর্তা।