স্টাফ রিপোর্টার-
সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে এক ডিভোর্সি নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষনের ঘটনায় মাগুরা জেলার সদর থানায় দায়েরকৃত মামলায় পলাতক প্রধান আসামী’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম-া অনুপ কুমার চাকী (৩০)। রাজধানীর তেঁজগাও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গতকাল রাতে রাজধানীর তেঁজগাও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী অনুপ কুমার চাকী একজন লম্পট প্রকৃতির ধুরন্ধর লোক। আসামীর সাথে ভিকটিমের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে আসামি জানতে পারে, ভিকটিম একজন ডিভোর্সী নারী এবং তার ৯ বছর বয়সী একজন পুত্র সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে আসামি তার যৌন চাহিদা মেটাতে বিভিন্নভাবে ফাঁদ পাতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে ভিকটিমের বাড়ীতে আসামি আসা যাওয়া শুরু করে। ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কুপ্রস্তাব দিলে ভিকটিম ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখ্যান করে।
অধিনায়ক বলেন, ওই নারী ভিকটিমকে ঝিনাইদহের একটি মন্দিরে নিয়ে সিঁদুর পড়িয়ে বিয়ের মিথ্যে নাটক সাজিয়ে অবৈধ সর্ম্পক স্থাপন করে। এই ঘটনার পর আসামি ভিকটিমের পরিবারের অনুপস্থিতিতে ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বিবাহের রেজিস্ট্রেশনের কথা বললে আসামি ভিকটিমকে রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকার করে। ভিকটিম উপায়ন্তর না পেয়ে আসামির বাড়িতে গিয়ে ঘর-সংসার করার কথা বললে আসামি বিবাহের কথা অস্বীকার করে এবং ভিকটিমকে বেদম প্রহার করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, অসহায় ভিকটিম এরপরও বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে, সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ভিকটিম ও তার পরিবারকে হত্যা ও সামাজিক যোগযোগের মাধ্যমে ভিকটিম এর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।
মামলার এজাহারের সূত্র ধরে র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, বিষয়টি ভিকটিমের পরিবার এবং এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে মাগুরা জেলার নারী ও শিশু নিযার্তন দমন ট্রাইব্যুনালে ২০০০ সালের নারী ও শিশু দমন আইনের ৯(১) ধারার অভিযোগে নালিশী দরখাস্ত করে ভিকটিম। পরবর্তীতে মাগুরা সদর থানায় গ্রেফতারকৃত অনুপ কুমার চাকীর বিরুদ্ধে এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি একটি ধর্ষণ মামলা রুজু হয়। ধর্ষণ মামলা দায়ের হওয়ার পরপরই সে স্থান পরিবর্তন করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পলাতক জীবনযাপন করে আসছিল।
তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই উর্ধতন কর্মকর্তা।