স্টাফ রিপোর্টার- দেশীয় অস্ত্রের মুখে নিরীহ মানুষদের জিম্মি করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটুত করার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি শামীম ডাকাত (৩২) বিগত ১৪ বছর যাবৎ পালিয়ে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে।
র্যাব বলছে, গত ২০০৯ সালের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মামলা দায়েরের পর ৯ মাস জেল হাজত খেটে জামিনে বেড়িয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। ১৪ বছর পর গতকাল (৬ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
আজ রবিবার (৭ এপ্রিল) সকালে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যম’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিগত ২০০৯ সালের ৩১ জুলাই সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন মাজড়া মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছবুর হোসেন মোল্যা তার স্ত্রী-সন্তানদের বাড়িতে রেখে তার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে যায়। ছবুর মোল্যার অনুপস্থিতির সুযোগে ঐদিন রাত আড়াইটায় তার ঘরের দরজা ভেঙে গ্রেফতারকৃত আসামি শামীম ডাকাত তার সহযোগী আসামি সাজু মোল্যা, নুরু মোল্যা, জুয়েল মোল্যা, সোহাগ, বুদ্দু শেখ, কোবাদ, বাবুল, শাহী, জনি, মাফিজুর ও আলামিন ঘরে প্রবেশ করে ছবুর মোল্যার স্ত্রী ও সন্তানকে টেনে হিঁচড়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে তাদের গলায় ধারালো রামদা ও ছোরা ধরে
প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং ছবুর মোল্যার স্ত্রীর কানে থাকা স্বর্ণের দুল ও রক্ষিত নগদ ৭২,০০০/- টাকা, ১ টি স্বর্ণের আংটি, ১ টি স্বর্ণের চেইন, ১ ভরি রুপার গহনা ইত্যাদি লুট করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার পর ছবুর মোল্যার স্ত্রীর ডাক-চিৎকার শুনে প্রতিবেশী লোকজন ঘটনাস্থল ছবুর মোল্যার বাড়িতে উপস্থিত হয়। সংবাদ পেয়ে ছবুর মোল্যা নিজেও বাড়ি ফিরে আসে। ছবুর মোল্যার স্ত্রী ডাকাত দলের সদস্যদের মধ্যে সাজু মোল্যা ও নুরু মোল্যাকে ফেলায় পরদিন সকালে ছবুর মোল্যা বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করে। যার প্রেক্ষিতে পুলিশ সাজু মোল্যা ও নুরু মোল্যাকে গ্রেফতার করে।
অধিনায়ক বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত শামীম ডাকাতসহ ১০ জনের নাম প্রকাশ করলে পুলিশ শামীম ডাকাত’কে গ্রেফতার করে। জেল হাজতে ৯ মাস থাকার পর সে জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপন করে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা এলাকায় একটি রেস্তোরায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, মামলাটির দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালে গোপালগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালত এই মামলার ১২ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষনার পর গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে শামীম মোল্যা ময়মনসিংহ থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় এসে আত্মগোপন করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে ওই মামলার ১২ জন আসামির মধ্যে শামীম মোল্যা, জুয়েল মোল্যা, নুরু মোল্যা, সোহাগ, আলামিন, মাফিজুর ও কোবাদসহ মোট ৭ জন গ্রেফতার হয়েছে এবং বাবুল শেখ ২০২৩ সালে মারা গিয়েছে। মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক অপর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব এর গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।