স্টাফ রিপোর্টার-
রাজধানীর ভাটারা’র জোয়ারসাহারা এলাকায় ডিওএইচএস সোসাইটির রিকশার নম্বর প্লেট ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার’কে কেন্দ্র করে এক ব্যবসায়ীর পায়ে গুলি ও অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উত্তরা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাশেদুজ্জামান খান রাজু (৩৫), রকিব হোসেন মুন্না (৩২), মো. শারিকুল ইসলাম খান (৪৫), মো. আজিম পাটোয়ারী (৩৪), মো. মাহবুব খান (৩৫), শরীফ খান (৩৩) ও মো. সোহরাব খান (৩৩)।
ডিবি বলছে, তুচ্ছ ঘটনায় অস্ত্রের মহড়া ও গোলাগুলির নেপথ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মাদক ও চাঁদাবাজিসহ অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতো তারা। চালককে গুলির ঘটনায় দায়ের করা মামলা ছায়া তদন্তে নেমে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মহড়ার ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি বিদেশি রিভলবার, একটি বিদেশি শর্টগান, ভাঙা রিভলবার, ভাঙ ৯এমএম পিস্তল, ৭৫ রাউন্ড গুলি, দুটি শর্টগানের কার্তুজ, ২১০ রাউন্ড গুলির খোসা, পাঁচটি পুরাতন ম্যাগজিন, ৪০ গ্রাম গান পাউডারের বারুদ ও বিভিন্ন অস্ত্রের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।
রোববার (২৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ এক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, চলতি মাসের ১৮ তারিখ রাজধানীর ভাটারা থানার জোয়ারসাহারা এলাকায় ডিওএইচএস সোসাইটির রিকশার নম্বর প্লেটকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময়ে গ্রেফতার রাজু ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তার সহযোগী মুন্না রিকশাচালক রুবেলকে গুলি করলে তার ডান পায়ে লাগে। এরপরই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। পরে অস্ত্র উদ্ধার করতে মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ।
পরবর্তীতে তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় রাজধানীসহ গাজীপুর, মাদারীপুর, দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থনে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ভাটারা থানার জোয়ারসাহারার খা পাড়ায় অভিযান চালিয়ে রাজুর পারিবারিক কবরস্থানের পাশের বাথরুম থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়ে।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আসামিরা এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ভারাটাসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনা করেছিল। ফলে রিকশার নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে এলাকায় মহড়া চালায়। গ্রেফতাররা ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, ভাটারার জোয়ারসাহারা এলাকায় জমি কেনা-বেচা, ভবন নির্মাণ, টেন্ডারবাজি আধিপত্য বিস্তারসহ প্রায় সময়েই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। রুবেলের ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সবুজবাগ থানা এলাকায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সেটাতেও আমার ছয়জনকে গ্রেফতার করেছি। পাঁচটি অস্ত্র ও ৫০ রাউন্ডগুলি উদ্ধার করা হয়েছে।