স্টাফ রিপোর্টার-
লক্ষীপুর জেলার সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খোরশেদ আলম মিরনকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার পর পালিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষ হলো না যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জামালে’র।
অবশেষে পাঁচ বছর পলাতক থাকার পর গতকাল (১৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানাধীন দনিয়া এলাকা থেকে জামাল (৪০) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব -৩ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিডিয়া সিনিয়র এএসপি
শিহাব করিম।
তিনি জানান, বিগত ২০১৯ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খোরশেদ আলম মিরনকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ জামাল হোসেন ওরফে জামাল’ কে দীর্ঘ পাঁচ বছর পলাতক থাকার পর গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত খোরশেদ আলম মিরন সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার ও একই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে মিরন মেম্বারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আসমিরা। গত ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে মিরন মেম্বার দত্তপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব আলাদাদপুর গ্রামের একটি মুদি দোকানে বসে ছিলেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন ২০/২৪ জন সন্ত্রাসী মুদি দোকানের আশপাশে অবস্থান নেন। তাদের মধ্যে অস্ত্রধারী পাঁচজন অটোরিকশায় করে দোকানের সামনে এসে মিরন মেম্বারকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগার এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ খোরশেদ আলম মিরনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে।
পরবর্তীতে নিহত খোরশেদ আলম মিরন এর স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়ায় গ্রেফতারকৃত আসামি সহ ২২ জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলায় দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় গ্রেফতারকৃত আসামি জামালসহ আরো ১১জন’কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
শিহাব করিম বলেন, ওই মামলায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতার সংক্রান্তে চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এর অধিযাচন পত্রের প্রেক্ষিতে ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে র্যাব এ বিষয়ে আসামিদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে তাদের মধ্যে জামালকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।