স্টাফ রিপোর্টার- জুবাইদা সুলতানা (৪৪)। পরিচয় দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অনকোলজী বিভাগের প্রধান ডা. ফারহানা হক হিসেবে। এই পরিচয়েই রাজধানীর গুলশান ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, হোটেল রেডিসনসহ অভিজাত বিভিন্ন হোটেলে আয়োজিত সভা সেমিনারসহ সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বহুবার। এসব অনুষ্ঠানে আসা নারীদের টার্গেট করে কৌশলে চুরি করতেন ব্যাগ,মোবাইল, ল্যাপটপ ও টাকা।
অবশেষে ডিএমপির রমনা থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ তাকে আটক করতে সক্ষম হলেন। এসময় উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন হোটেল থেকে চুরি করা নারীদের গহনা,মোবাইল,ভ্যানিটি ব্যাগ,টাকা, ল্যাপটপসহ বিপুল পরিমাণ কসমেটিকস।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা ক্লাবের একটি সেমিনার থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফারহানার ব্যাগ চুরির পর তার পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন হোটেলে চুরি করা শুরু করেন জুবাইদা। চুরি করে পাওয়া টাকা ও মালামাল বিক্রির অর্থে বিলাসী জীবন জাপন করতেন এই দূর্ধর্ষ এলিট চোর।
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন,রেডিসন হোটেল, সোনারগাঁ হোটেল,ঢাকা ক্লাবসহ বিভিন্ন ভিআইপি অনুষ্ঠানে চিকিৎসক পরিচয়ে প্রবেশ করে মোবাইল,ব্যাগ,ল্যাপটপ, টাকা,অলংকার চুরি করা অভিজাত চোর চক্রের এক নারী সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই নারী বিভিন্ন কৌশলে নামিদামি হোটেলে চুরি শেষে কোনো পণ্য পছন্দ হলে নিজে ব্যবহার করতেন। বাকিটা তার প্রবাসী স্বামীর সহযোগিতায় বিক্রি করতেন। গ্রেফতার জুবাইদার বাবা একজন অবসর প্রাপ্ত সচিব। তার বড় বোনও সরকারি চাকরি করে। তার চুরির স্বভাবের কারণে পরিবার থেকে সে বিতারিত হয়। গ্রেফতার জুবাইদার দ্বিতীয় বিয়ের স্বামী প্রবাসে থাকে। তিনি তার চতুর্থ স্ত্রী।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন,জুবাইদা এখন পর্যন্ত সাত থেকে আটশো মোবাইল চুরি করেছে। সেমিনারে ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করে অংশগ্রহণ করতেন। সারাদিন গুরু-গম্ভীর আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চুরি করে সটকে পরতেন। তিনি টার্গেট করতেন কর্মজীবি মহিলা ও স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের। বিলাসী জীবন-যাপনে অভ্যস্ত জুবাইদা নিজেকে পরিমিতভাবে গুছিয়ে রাখতেন।