1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩১ অপরাহ্ন

সাভারে হকার বসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০ 

  • সময় : রবিবার, ১০ মার্চ, ২০২৪
  • ৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার সাভারে ফুটপাথে হকার বসাকে কেন্দ্র করে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সমর্থকদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টায় সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আহতরা হলেন, আনোয়ার (৪৫), আপন (১৮), কাজল (৩৫), জুয়েল (৪০), সোহেল (৩৫), লিটন (৩০), শিপার (৩০), আব্দুর রহমান (২০) এবং বিল্লাল হোসেন(২০) ও রতন হোসেন(৩০)। এদের মধ্যে শেষের তিনজন বর্তমান সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সমর্থক। বাকিরা সবাই সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা.এনামুর রহমানের সমর্থক বলে জানা গেছে।

হকারদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমান সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সমর্থক রতন হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা (মামলা নং-১৭) দায়ের করেছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকবর আলী খান, পিপিএম।

শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে সাভার মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে ছাত্রলীগ ও হকার্স লীগের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন, বাংলাদেশ হকার্সলীগ সাভার উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির মোল্লা(৫০), সহ-সভাপতি রমজান (৪৫), সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল(৩২), বাংলাদেশ হকার্স লীগ সাভার পৌর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম (৪০), সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার (৫০) ও ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম (৩৫) এবং ইসমাইল (৪০), লিটন(৩৫), মামুন(৩৩)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।  মামলার প্রধান আসামি আব্দুল কাদির মোল্লা ছাড়া সবাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের সমর্থক ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন ও সুমনের নেতৃত্বে শতাধিক ব্যক্তি মাইক হাতে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের আরএস টাওয়ার থেকে শুরু করে নিউ মার্কেট পর্যন্ত সশস্ত্র মহড়া দেয়। তারা মাইকিং করে হকারদের বলেন, কোন হকার রাস্তায় বসতে পারবে না, তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আদেশক্রমে ঢাকা-১৯ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। নিউমার্কেট থেকে ফেরার পথে মাছ বাজারের সামনে ওই দলের উশৃংখল সদস্যরা হকারদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মালামালসহ ভ্যান উল্টে দেয়। এর প্রতিবাদ করলে হকারদের ওপর হামলা চালায় তারা। এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হন।

মাইকিং ও এই সংঘর্ষের ঘটনার কয়েকটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনে সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি জয়ের পর চলাচলের রাস্তা ফুটপাতের হকার উচ্ছেদের ঘোষণা দেন। নির্বাচনের দুইদিন পর মাইকিং করে সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ডের উভয় পাশে ফুটপাতে অভিযান চালিয়ে হাজারখানেক হকার উচ্ছেদ করা হয়। এরপর থেকেই ফুটপাত পুনর্দখল ঠেকাতে তৎপর থাকে পুলিশ।

এর কয়েকদিন পর সাভার উপজেলায় মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের আগমনের সংবাদ পেয়ে উপজেলা ঘেরাও করে পূর্ণবাসনের দাবি তোলে সাধারণ হকাররা। এ সময় তাদের পূর্ণবাসন খুব দ্রুতই করা হবে বলে ঘোষণা দেন সাইফুল ইসলাম।

পূর্ণবাসনের ঘোষণা দেওয়া হলেও কিছুদিন পর সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের রানা প্লাজার পাশে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় সাভার হকার্স মার্কেট নামে একটি মার্কেট তৈরির চেষ্টা করে আসছে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সমর্থকরা। তবে মানুষের ভিড় না থাকায় সেখানে হকারদের যাওয়া নিয়ে অনিচ্ছা ও বিভক্তি দেখা দেয়। পূর্ণবাসন না করে জোরপূর্বক হকারদের সেই স্থানে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ সাধারণ হকারদের।

সাধারণ হকার মুক্তার হোসেন, মাহমুদুর রহমান, সাইদ খান ও জিয়াউর রহমান জানান, আমরা স্বল্প পুঁজিতে ফুটপাতে ব্যবসা করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোন মতে জীবন যাপন করি। নির্বাচনের পর ফুটপাতের হকার উচ্ছেদ করায় আমরা পরিবার নিয়ে বিপাকে রয়েছি। আমরা পূর্ণবাসন চাইলে এখন আমাদেরকে ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় দোকান করতে বলা হচ্ছে। সেখানে দোকান নির্মাণের জন্য এককালীন মোটা অংকের টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমরা এত টাকা পাবো কোথায়। শুধু তাই নয় সেখানে মাসিক ভাড়া ও দৈনিক টাকা দিতে হবে। এজন্য আমরা সেই মার্কেটে যেতে চাইনা। পেটের তাগিদে দোকান নিয়ে বসলে প্রত্যেকদিন আমাদের উপর ধাওয়া করে নির্যাতন চালানো হয়। কখনো কখনো মারধর করে মালামাল নিয়ে চলে যায় তারা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী হকার্স লীগ সাভার উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক লিটন খান বলেন, নির্বাচনের পর ঘোষণা দিয়ে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য হকার উচ্ছেদ করে। সাধারণ হকারদের পক্ষ থেকে স্থায়ী পূর্ণবাসনের দাবি তুলে ধরা হয়। তিনি মেনেও নিয়েছিলেন, তবে এখন তার সমর্থকদের তৈরি করা একটি ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় হকারদের জোরপূর্বক যেতে বলা হচ্ছে। শুক্রবার রাতে সাধারণ হকারদের উপর বর্বর হামলা চালায় সেই মালিকানা জায়গার মার্কেট কর্তৃপক্ষ। তারা সবাই বর্তমান সংসদ সদস্য এমপি সাইফুল ইসলামের সমর্থক বলে মাইকিং করে পরিচয় দেন। আর তাদের করা মার্কেটে হকারদের যেতে হবে এটাও নাকি এমপির নির্দেশ। আমাদের পূর্ণবাসনের ব্যাপারে সংসদ সদস্যসহ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত পত্র দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই পত্রের জবাবের অপেক্ষায় আছি। এর মধ্যেই সাধারন হকারদের উপর এমন বর্বর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

বা বু ম/ সুমন রায়

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪