স্টাফ রিপোর্টার-
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্দ্যান থেকে ছিনতাইকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির মিরপুর থানা পুলিশ। এ চক্রের সদস্যরা সপ্তাহে একবার ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত গাড়ির রং পরিবর্তন করে পুনরায় ছিনতাইয়ে নামত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন – মোঃ নাছির(৩৫), বিল্লাল ওরফে ফাইটার বিল্লাল(২৪), মোঃ সুমন ওরফে ঘাড় ত্যারা সুমন(২২)।
সোমবার (১১ মার্চ) রাতে ডিএমপির মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুন্সী ছাব্বির আহম্মদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি এবং আরেক ক্রিকেটার ফারজানা হক পিংকির ছিনতাই হওয়া দুটি লাগেজ উদ্ধারে নেমে তাদের’কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় খোয়া যাওয়া একটি লাগেজ ও লাগেজের ভিতরে থাকা আংশিক মালামাল, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার এবং বেশি কিছু দেশীয় অস্ত্র যেমন- ছোড়া, চাপাতি, চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি ছাব্বির আহম্মদ বলেন, গ্রেফতারকৃতরা মোহাম্মদপুর কেন্দ্রিক সন্ত্রাসী আনোয়ার গ্রুপের সদস্য। তারা সাধারনত রাত ১২ টার দিকে মাদকদ্রব্য সেবন করে বের হয়ে ভোর রাত সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দস্যুতা ও ছিনতাই করে। যে সকল লোকজন সাধারনত রাস্তার মোড়ে নেমে রিক্সা, সিএনজি বা হেটে গন্তব্যস্থানে রওনা করে তাদের লক্ষ্য করে হঠাৎ প্রাইভেটকার দিয়ে পথরোধ করে চাপাতি, ছুরি, দা, চাকু ইত্যাদির মাধ্যমে আঘাত করার ভয় দেখিয়ে মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যেত।
তিনি আরও বলেন, উদ্ধারকৃত গাড়িটি তারা ছিনতাই কাজে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে কিনেছিল এবং প্রতি সপ্তাহে একবার গাড়িটির রং পরিবর্তন করত।ছিনতাই সংগঠিত করার পর তারা দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে ওই এলাকা ত্যাগ করত। প্রাইভেটকার দিয়ে ১ সপ্তাহ ছিনতাই করার পর নিজেদের রক্ষার জন্য তারা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মোটর সাইকেল যোগে একই প্রক্রিয়ায় তাদের ছিনতাই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১ মার্চ রাত আনুমানিক ৩ টায় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট
দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি এবং ফারজানা হক পিংকির ২ টি লাগেজ নিয়ে ফারজানা হক পিংকির স্বামী মোঃ মাহবুব রাকিব মিশন গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা ফেরেন। মিরপুরের শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তাদের ব্যবহৃত গাড়িটি পার্কিং করে রেখে লাগেজ দুটি নিয়ে পায়ে হেটে তারা বাসার উদ্দেশ্য রওনা হন। এসময় মিরপুর ৬ নাম্বার রোডের বাসায় পৌছে তারা বাড়ির সিকিউরিটি গার্ডকে গেইট খোলার জন্য ডাকাডাকি করতে থাকা অবস্থায় হঠ্যাৎ করেই একটি ধুসর বাদামী রংয়ের প্রাইভেট কার থেকে ৩ জন অজ্ঞাত লোক এসে তাদের চাপাতি, ছুরি দিয়ে আঘাতের ভয় দেখিয়ে লাগেজ দুটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ওই নারী ক্রিকেটারের স্বামী মিরপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করেন।
তবে ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করলেও এই চক্রটির মূলহোতা এখনো পলাতক অবস্থায় রয়েছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি ছাব্বির আহম্মদ বলেন, এই দলের মূল ব্যক্তির নাম আমরা পেয়েছি। তাকে গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি খুব দ্রুতই আমরা তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।