1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকাবাসীকে নিরাপত্তা প্রদানের মহান দায়িত্বে পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই-ডিএমপি কমিশনার আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধি দল সবজি, পেঁয়াজ ও মুরগির দাম কমলেও, কমেনি আলুর দাম ঘোষিত হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ডিএমপি কমিশনার মোঃ সাজ্জাত আলীর দায়িত্বভার গ্রহণ নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক হবেন- প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ও খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষেই দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সংঘটিত হবে-আইন উপদেষ্টা

ট্যুরিস্ট ভিসায় ১৬ লাখ টাকার চুক্তিতে  ইউরোপ যাত্রা! ফিরতে হয় খালি হাতে

  • সময় : বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৭০

স্টাফ রিপোর্টার-

ট্যুরিস্ট ভিসায় সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে লোক পাঠানোর নামে অভিনব প্রতারনা হচ্ছে খোদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। সুযোগ বুঝে ট্যুরিস্ট ভিসায় অথবা ভুয়া ভিসায় বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য এবং সেনজেনভুক্ত বিভিন্ন দেশে ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে গত দেড় বছরে প্রায় আড়াই শতাধিক মানুষকে অবৈধ পন্থায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সব দেশে ধরা পড়ে তাদের অনেককে ফিরে আসতে হয়েছে শুন্য হাতে, কেউ জেল খেটেছেন, কেউ এখনো রয়েছেন জেলেই।

সর্বশেষ গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে বিমানবন্দর থানাধীন হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা টার্মিনাল-২ এর পূর্ব পাশের বাদাম গাছের নিচে রাস্তার উপর অবৈধভাবে জাল ভিসা ব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজসে বিদেশে পাঠানোর পায়তারা চলছিল।

বিষয়টি টের পেয়ে এপিবিএন এর সদস্যরা তাদেরকে কৌশলে নজরদারিতে রেখে ডিবি পুলিশকে খবর দেয়। এপিপিএনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যৌথভাবে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই হোতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও মোহাম্মদ কবির হোসেনসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে ।

গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন বিদেশ যেতে ইচ্ছুক যাত্রী জানে আলম, সাব্বির মিয়া, সম্রাট সওদাগর।

গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে জব্দ করা হয়েছে, তিনটি পাসপোর্ট, ৩ টি জাল ভিসা, ৪ টি এনআইডি, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশের স্পেশাল কার্ড, ৪টি মাস্টার/ ভিসা কার্ড, ৫টি মোবাইল, ৩টি ই-টিকেট, ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা সংশ্লিষ্ট ৫/৬ পাতা জাল ডকুমেন্ট, ১টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, নগদ ১৬ হাজার টাকা।

ডিবি পুলিশ বলছে, আদালতের নির্দেশে এক দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে গ্রেফতারকৃতদের। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৩ যাত্রী স্বীকার করেছে ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা দালালদেরকে দিয়ে এই অবৈধ পথে ফ্রান্স, ইতালি এবং গ্রিসে যাচ্ছিলেন তারা। দুই হোতার বক্তব্যে উঠে এসেছে বাংলাদেশ বিমানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কারো কারো এই চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার(২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পড়ে পড়ে লাখ লাখ টাকা খোয়াচ্ছে সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন পন্থায় তারা মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে সেনজেন ভিসাভুক্ত ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে যাবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এজন্য সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্র। এক সময় দেখা যেতো নৌ পথে লিবিয়া বা ইউরোপিয়ান দেশ ইতালিতে যাবার পথে অনেকে মারা যেতেন। অনেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতেন। এরপর জেল খাটতেন। কেউ কেউ কাজও পেয়ে যেতেন। এখন এ পন্থায় ইউরোপ যাবার পথ কঠিন হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখন নতুন পন্থা অবলম্বন করছে দালাল চক্রের সদস্যরা। তারা বাংলাদেশ বিমানের সিকিউরিটি ম্যান, কুয়েত এয়ারওয়েজের বুকিং সহকারি, কিছু জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠান ও ট্রাভেল এজেন্সিসহ দক্ষ কম্পিউটার অপারেটর মিলে শক্তিশালী একটি চক্র যারা ট্যুরিস্ট ভিসার কথা বলে সেনজেন ভিসাভুক্ত দেশে কোনো রকম পাঠিয়ে দেবার চেষ্টা করছে। এরপর পৌছে গেলে আর ফেরত আসতে হবে না এই বলে কারো কারো কাছ থেকে ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

চক্রটির কাজ হচ্ছে, বিমানবন্দরে কোনো রকমে ঢুকিয়ে দেয়া। ট্রাভেল এজেন্সি টিকিট করে দেয়। ইউরোপিয়ান কোনো দেশের যাবার জন্য সে টিকিট পেয়ে বিমানবন্দরে ঢোকে। বোর্ডিং আনতে গেলে বাংলাদেশ বিমানের সিকিউরিটি ম্যান ও কুয়েত এয়ারওয়েজের বুকিং সহকারি তখন দেখে। তারা তো বায়াস্ট। তারা বলে সব ঠিক আছে। ইমিগ্রেশনেও চেক করা হয় না। বিদেশগামী ভুক্তভোগীরা কিছু না বুঝে ভূয়া বোর্ডিং কার্ড নিয়ে বিমানে উঠে চলে যায়।

হারুন বলেন, এভাবে ফাস্ট ডেস্টিনেশন বাংলাদেশ থেকে তারা উড়াল দিলেও অনেক সময় তারা মধ্যবর্তী স্থানে ট্রানজিট পয়েন্টে আটক হয়, কখনো সর্বশেষ ফ্রান্স, জার্মান অথবা ইউরোপের ডেস্টিনেশনেও গিয়ে আটক হন। কারণ এসব জায়গায় চেক করতে গিয়ে দেখে ভূয়া। তখন কাউকে দেশে পাঠায়। কাউকে কাউকে জেলে পাঠায়। যারা জেলে যায় তারা পরবর্তীতে কেউ কেউ কাজও পেয়ে যায়। চক্রের সদস্যরা এই সুযোগটি নেয়। বলে মামলা করে জেল থেকে ছুটে বের হতে পারবেন।

এই প্রতারণায় জড়িত কিছু জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠান, ট্রাভেলস এজেন্সি, এয়ারলাইনস ও কম্পিউটার অপারেটর মিলে এসব করছে।

তিনি বলেন, গতকাল একই কায়দায় ট্যুরিস্ট ভিসায় পাঠানোর চেষ্টাকালে এপিবিএন সদস্যরা তাদের সন্দেহ করে। এপিবিএন ডিবি পুলিশকে খবর দিলে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি প্রধান বলেন, ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা নিয়ে অসাধু চক্রের খপ্পড়ে পড়ে যারা বিদেশে যাচ্ছে তারা তো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আমরা বার বার বলছি, সাবধান করছি। জালিয়াতি বা প্রতারণার খপ্পড়ে পড়ছি কি-না তা চেক করার জায়গা তো আছে। আমরা চেক করলে, ভেরিফিকেশন করলেই তো বোঝা যায়।

হারুন আরও বলেন, এই কাজে যারা জড়িত তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা বলেছে, এয়ারলাইন্সের সিনিয়র কর্মকর্তা, সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার, সুপারভাইজাররা জড়িত থাকতে পারে। যদি জড়িতই না থাকবে, তাহলে এয়ারলাইন্সের সিনিয়র কর্মকর্তারা কিভাবে অনায়েসে বোর্ডিং পাশ দিয়ে দেয়। তাদের সম্পর্কে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। অবৈধ লোকদের ব্যাপারে তারা কেন কঠোর হয় না, টিকিট বোর্ডিং পেয়ে যাচ্ছে, বিদেশেও চলে যাচ্ছে।
গ্রেফতার পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলে, জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা জেনেছি, পুরো চক্র মিলে আড়াই শ’ মানুষকে তারা ট্যুরিস্ট ভিসায় পাঠিয়েছে। যাদের অনেকে মানবেতর জীবন যাপনের পর দেশে ফিরে এসেছে। কেউ এখনো জেল খাটছে। এই চক্রটির সঙ্গে এজন্যই সিনিয়র কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারে বলে আমাদের ধারণা-কারণ আড়াই শ’ লোক বিদেশ যেতে পেরেছে অবৈধ পন্থায়!

আমরা অবশ্যই রিমাণ্ডে নিয়ে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো, তারা কিভাবে টাকাটা হাতিয়ে নিচ্ছে। কারণ এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের কিছু দালাল চক্রের সদস্যরাও রয়েছে বলেও দাবি করেন হারুন।

বাংলাদেশ বিমানের উর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকেন তাহলে কি ধরণের ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে হারুন বলেন, বিমান বাংলাদেশের নিয়োগের প্রশ্নফাঁস থেকে শুরু করে অনেক কিছুর ব্যাপারে আমরা তদন্ত করেছি। আমরা তদন্ত প্রাপ্ত তথ্যের বাইরে এক পা পিছপা হইনি। আমরা তদন্ত কাজ শেষ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সে প্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এইক্ষেত্রেও আশা করছি জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪