স্টাফ রিপোর্টার- সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংশ বিক্রি করায় রাজশাহীর বাঘার মাংশ ব্যবসায়ী মামুনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে আরেক ব্যবসায়ী খোকন। হত্যার পর আত্মগোপনে চলে গেলে মাদারীপুর থেকে খোকন কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত ২০ জানুয়ারি আনুমানিক সকাল ১০ টায় রাজশাহীর বাঘা থানার আড়ানী হাটে ন্যায্য মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় একজন মাংস ব্যবসায়ীকে দেশিয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে অপর একজন মাংস ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকান্ডের ওই ঘটনায়
নিহত মামুনের ছোট ভাই বাদী হয়ে রাজশাহীর বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। র্যাব হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
কমান্ডার মঈন জানান, মামুনকে হত্যার পর আত্মগোপনে চলে যান খোকন। তথ্য প্রযুক্তি ও র্যাবের গোয়েন্দা অনুসন্ধানের ভিত্তিতে গতকাল রাতে র্যাব-৫ ও র্যাব-৮ এর আভিযানিক দল মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাংস ব্যবসায়ী হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি মোঃ মিজানুর রহমান ওরফে খোকন (৩৫)’কে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও জানান, নিহত মামুন গ্রেফতারকৃত খোকনের নিকট আত্মীয়। তারা রাজশাহীর বাঘা থানার আড়ানি বাজারে একত্রে গরুর মাংস বিক্রির ব্যবসা করতো। ভোক্তা অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্মিলিত বৈঠকে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে খোকন ও মামুনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে গত বছরের শেষের দিকে মামুন ভোক্তা অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আলাদাভাবে মাংস বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। ফলে মামুনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমান বেড়ে যায় এবং গ্রেফতারকৃত খোকনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমান কমে
যায়।
কমান্ডার মঈন বলেন, নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করা নিয়ে ঘটনার দিন তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হলে গ্রেফতারকৃত খোকন উত্তেজিত হয়ে মাংস কাটার ছুরি দিয়ে মামুনকে প্রকাশ্যে পেটে ও বুকের ডান পাশে উপর্যুপরি আঘাত করে ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে খোকন প্রথমে রাজশাহীর তাহিরপুরে তার এক আত্মীয় বাড়িতে আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় স্থায়ীভাবে আত্মগোপনের লক্ষ্যে তার পূর্ব পরিচিত এক বন্ধুর মাধ্যমে সেখানে ড্রেজার শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করে।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত খোকন মাংস ব্যবসার পাশাপাশি মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর বাঘা থানায় মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪টি মামলা রয়েছে এবং এসকল মামলায় সে ভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে।