1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৮ পূর্বাহ্ন

চিংড়ি ঘের দখলে নিতে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১৪

  • সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৩০৩

স্টাফ রিপোর্টার-

চিংড়ি মাছের ঘের দখলকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদ হোসেনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত ১৪ জন আসামিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটিলিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব জানায়, হত্যাকান্ডের পর ঘটনাটি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলে আসামীরা।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) সকালে র‌্যাব সদর দফতরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শহিদুল ইসলাম লিটন (৪৫), আবু জাফর (৫০), মো. সোহেল (৩৭), আজগর আলী (৪৫), আবুল হোসেন পাখী (৩৫), নাজমুল হোসাইন রকি (২৭), আবদুর রহিম (৪৮), জয়নাল আবেদীন (৫৫), মো. শাহিন (২৩), মুহাম্মদ শাহাব উদ্দিন (৪৪), প্রদীপ কুমার শীল (৪৮), মো. রিদুয়ান (৩১), আবদুল হক (৫৫), মো. কাইছার (৩৫)।

খন্দকার আল মঈন বলেন, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার সাহারবিল এলাকায় নির্বাচন পরবর্তীতে সহিংসতার ঘটনায় মোহাম্মদ হোসেন নামক এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণের ঘটনায় হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ ও এজাহারনামীয় ও হত্যাকান্ডে জড়িত ১৪ জন আসামিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।


তিনি বলেন, গত ৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার রামপুরা চিংড়িঘের এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীর গুলিতে মোহাম্মদ হোসেন নামক একজন চিংড়ি ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে বাদী হয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। র‌্যাব এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার রাতে র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের মূলপরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দেয়।

এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় ‘‘রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি’’ এর সভাপতি হিসেবে গ্রেফতারকৃত আবু জাফর এবং সেক্রেটারি হিসেবে শহিদুল ইসলাম লিটন দায়িত্ব পালন করে আসছিল। ভিকটিম মোহাম্মদ হোসেন সমিতির সদস্য হিসেবে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে চিংড়িঘের এলাকার ৪৮ একর জমির মধ্যে খামার ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন, পাশাপাশি চিংড়িঘের পাহাড়ার দায়িত্বেও নিয়োজিত ছিলেন। সমিতিটিতে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ জন্ সদস্য রয়েছে। সমিতির মালিকানাধীন চিংড়িঘেরের সাহারবিলের রামপুর মৌজায় ৫ হাজার ১১২ একরের বিশাল একটি চিংড়িঘের রয়েছে। এর মধ্যে কিছু চিংড়িঘের সমিতির নিয়ন্ত্রণে ছিল না। নিয়ন্ত্রণে না থাকা চিংড়িঘের দখলে নিতে গত ৯ সন্ধ্যার পর থেকে গ্রেফতারকৃত লিটন এর নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী চিংড়িঘের এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দিতে থাকে এবং এসময় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে কয়েকশত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত আবু জাফর ও লিটন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হিসেবে গ্রেফতারকৃত সোহেল, আজগর আলী, আবুল হোসেন পাখী, নাজমুল হোসাইন রকি ও আবদুর রহিমকে গুলিবর্ষণের দায়িত্ব দেয়।

পরবর্তীতে গত ৯ জানুয়ারি ১১টায় গ্রেফতারকৃত লিটনের নির্দেশে মোবাইলে ফোন করে কৌশলে ভিকটিম মোহাম্মদ হোসেনকে চিংড়িঘের এলাকায় ডেকে নিয়ে আসা হয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে ভিকটিম হোসেন দুপুরের পর বাড়ি ফিরতে চাইলে লিটন ও তার সহযোগীরা রাতে মিটিং আছে জানিয়ে তাকে ফাঁকা জায়গায় নির্মিত ঘরে কৌশলে আটকে রেখে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।

পরবর্তীতে ওই দিন দিবাগত রাতে ভিকটিম মোহাম্মদ হোসেনকে চিংড়িঘেরের পাশে লবণ চাষের খালী জমিতে নিয়ে গিয়ে লিটন তার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সোহেল ও তার সহযোগীদের মাধ্যমে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে একনলা বন্দুক দিয়ে ভিকটিম মোহাম্মদ হোসেনকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে।

ভিকটিমকে হত্যার পর গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকান্ডের ঘটনাটি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।

পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধ্যমে হত্যাকান্ডের বিষয়ে মিথ্যা প্রচার-প্রচারণা চালায় ও হত্যাকারীদের বিচারের জন্য আন্দোলন করতে থাকে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আধিপত্য বিস্তার, চিংড়িঘের দখল ও আন্তঃকোন্দলের কারণে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে জানা যায়। হত্যাকান্ডের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের নাম প্রকাশিত হলে গ্রেফতারকৃতরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকে এবং আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়।

গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলাম লিটন স্থানীয় কলেজ হতে ডিগ্রি সম্পন্ন করে জ্বালানি তেলের ব্যবসা শুরু করে। পরবর্তীতে সে ‘রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির’ সেক্রেটারী নির্বাচিত হয়। চিংড়িঘেরে নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য সে এলাকায় ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দল গঠন করে। সে এলাকায় তার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দলের মাধ্যমে অবৈধভাবে জমি দখল, হুমকি, মারামারি, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, অপহরণসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় দস্যুতা, মারামারি, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, অপহরণসহ ৭টির অধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত সোহেল, আজগর আলী, আবুল হোসেন পাখী, নাজমুল হোসাইন রকি ও আবদুর রহিম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হিসেবে গ্রেফতারকৃত লিটনের নির্দেশে ভিকটিম মোহাম্মদ হোসেনকে গুলি করে নৃসংশভাবে হত্যা করে। গ্রেফতারকৃত সোহেল এর বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় হত্যা, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মারামারিসহ ৭টির অধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকত আবুল হোসেন এর নামে চকরিয়া থানায় হত্যা, মারামারিসহ ৪টি মামলা রয়েছে। রহিমের নামে চকরিয়া থানায় একটি মারামারি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

এছাড়াও গ্রেফতারকৃত অন্যান্যরা গ্রেফতারকৃত আবু জাফর ও লিটনের সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে কক্সবাজারের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪