স্টাফ রিপোর্টার-
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)’র অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, নির্বাচন বানচাল করতে বাস-ট্রেনসহ যানবাহনে আগুন লাগানো, হামলাসহ নাশকতা ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের মনে ভয় সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বিএনপি। কিন্তু এরপরও মানুষ নির্বাচন মুখী হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে দলটির নেতা-কর্মীরা।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবিতে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে তিনি এ কথা বলেন।
ডিবির হারুন বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর নিউ মার্কেট থানার কাটাবন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রাইম প্রিন্টার্স থেকে বিএনপির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল শাখার সভাপতি এবং কৃষক দলের একজন যুগ্ম আহ্বায়ক। ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা ও লালবাগ বিভাগ। এই সময়ে প্রাইম প্রিন্টার্স থেকে নির্বাচন বিরোধী ও সরকার বিরোধী ৫০ হাজার লিফলেট উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় রাজধানী নিউ মার্কেট থানায় বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার তদন্তে নেমে এবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবির লালবাগ বিভাগও রমনা বিভাগ। এই সময়ে ‘ডিজাইন রুম’ নামের একটি দোকান থেকে প্রিন্ট করা আরও দুই হাজার লিফলেট উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় প্রিন্টিং মেশিন, ফটোকপিয়ারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- নাজমুল হুদা ওরফে রাকির (২৬), রাসেল মিয়া (২৭), নাহিদ হোসেন (৩৩) এবং বিকাশ কুমার শীল (২৮)।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, নাজমুল হুদা রাকিব ছাত্রদল তেজগাঁও কলেজ শাখার যুগ্মসাধারণ সম্পাদক। রাসেল ও নাহিদ পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ও যুবদল কর্মী। আর বিকাশ কুমার শীল ‘ডিজাইন রুম’ প্রিন্টিং দোকানের লোক।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে হারুন বলেন, গ্রেফতার ছাত্রদল নেতা এবং যুবদল কর্মীরা স্বীকার করেছে টাকা, দলীয় পদ দেওয়ার প্রলোভণ দেখিয়ে দুই নির্মাণ শ্রমিকসহ বেশ কয়েকজনকে ভোলা থেকে ঢাকায় আনা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্মাণ শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, যুবদল এবং ছাত্রদলের বেশ কিছু সিনিয়র নেতাদের নেতৃত্বে রাজধানীর ওয়ারী, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় তাদের দিয়ে ঝটিকা মিছিল, মশাল মিছিল, ভাঙচুর আগুন দেওয়া, বিস্ফোরণ ঘটানোসহ নির্বাচন বিরোধী লিফলেট বিতরণের কাজ করানো হয়। এই ঘটনায় জড়িত যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের খোঁজা হচ্ছে।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে দায়বদ্ধ। বিএনপি’র নেতাকর্মীরা একদিকে যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমা বিস্ফোরণ, রেলের বগিতে আগুন, স্লিপার তুলে ফেলার মতো ঘটনা ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়েও সফল হতে পারে নাই। এই ব্যর্থতাকে ঢাকতে লিফলেট ছাপিয়ে, নানা রকমের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে জনগণকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে, নির্বাচন কেন্দ্রে না আসতে কুমন্ত্রণা দিয়ে লিফলেট বিতরণ করছে। এই লিফলেটের মাধ্যমে তারা নাগরিকদেরকে সকল প্রকারের খাজনা, কর ও বিল পরিশোধ না করে একটি ও রাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির কুমন্ত্রণা দিচ্ছে। এভাবে তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই অপপ্রচার, অপচেষ্টা সংবিধান বিরোধী, দেশ বিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী এবং জন বিরোধী। এই প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে কাজ করছে ডিবি পুলিশ।