স্টাফ রিপোর্টার-
রাজধানীর গাবতলি বাস স্ট্যান্ড ও যাত্রাবাড়ি থানার কাজীর গাঁও এলাকায় পৃথক অভিযানে দুটি বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ দুই অস্ত্র বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- আলমগীর হোসেন (৩৮), সৈয়দ মিলন (৪০) ও শেখ জিয়াউর রহমান জিয়া (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
গতকাল শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রতিটি টিম নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে গাবতলী বাস স্ট্যান্ড ও যাত্রাবাড়ি এলাকা অস্ত্র ব্যবসায়ীরা অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে দুই স্থানে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ দুজনকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা লালমনির হাটের সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে শেখ জিয়াউর রহমান জিয়া (৪২) মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহ করত। এই জিয়া মিডিয়া ম্যানসহ কাজ করছে।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, এই অস্ত্র ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য ছিলো লালমনির হাটের সীমান্ত থেকে অস্ত্র এনে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দিত। তারা এই সকল অস্ত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করত। নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে ভয় দেখানো ও সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হত। এমন কি তারা প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি দিত। আমরা জিয়াকে গ্রেফতার করেছি তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে, আর কতগুলো অস্ত্র এভাবে কার কার কাছে বিক্রি করা হয়েছে।
গ্রেফতার অস্ত্রকারবারিদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন বলেন, গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে মিলন একটা সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করত। ছাত্রলীগ করলেও তার নামে ৯টা মামলা রয়েছে। একাধিকবার জেল খেটেছে। সুতরাং আমাদের চোখে তিনি একজন সন্ত্রাসী। ছাত্রলীগ করলেও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারা কোন কোন প্রার্থীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে সেটি আমরা তদন্তের মাধ্যমে বের করব।
নির্বাচনে তাদের মাধ্যমে কত অস্ত্র এসেছে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আলমগীর ও মিলন নামের দুই সন্ত্রাসী লালমনির হাটসহ বিভিন্ন বর্ডার থেকে অস্ত্র আনা হয়। এরপর জিয়ার কাছে বুঝিয়ে দেয়। এই জিয়া বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। পাশাপাশি এই সকল অস্ত্র ব্যবহার করে তাদের আরেকটি পরিচয় হলো তারা অস্ত্র দিয়ে বিভিন্ন প্রার্থীদের পক্ষ নিয়ে প্রতিপক্ষকে হুমকি দিত বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। তবে কতটি অস্ত্র বিক্রি হয়েছে সেটি আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষে প্রস্তুতি ও নাশকতার হুমকি আছে কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি কি করা যাবে না। পাশাপাশি আমরা খোঁজ খবর রাখছি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর পাশাপাশি আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য কাজ করছে। একদিকে বছর শেষে নতুন বছর আসছে। অন্য দিকে নির্বাচন সামনে সব কিছু মিলিয়ে আমরাদের পর্যাপ্ত ফোর্স মাঠে কাজ করছে।