স্টাফ রিপোর্টার-
রাজধানীর পল্টনে গত ২৮শে অক্টোবর বিএনপির ডাকা সমাবেশে হামলা ভাংচুর ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজন ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজন বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগ।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ কেন্দ্রীক হরতাল ও অবরোধে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে নেতাকর্মীরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও পুলিশের সরকারীকাজে বাধা প্রদান করে। এমন কি বিভিন্ন জায়গায় যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগের ফলে জনমনের ভীতির সৃষ্টি হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- বিএনপি কর্মী ইসমাঈল পাটওয়ারী (৬৫), শ্যামপুর থানার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল সাঈদ রনি, শ্যামপুর থানার ৪৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সচিব এসএম মুরাদ হোসেন মামু এবং বিএনপি-যুবদলের কর্মী মাকসুদুর রহমান মাসুদ, মোস্তফা কামাল সুমন। বাসে আগুন দেওয়ার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আল আমিন (২৯)।
রবিবার ( ১৯ নভেম্বর ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ কথা বলেন।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, বিএনপির সমাবেশে শাহজাহানপুর থানার কমলাপুর রেলওয়ে অফিসার্স কোয়ার্টারের সামনে বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশকে মারধর করে। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায় ইসমাঈল পাটওয়ারী দুটি সবুজ রংয়ের প্লাস্টিকের লাঠি নিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ওপর হামলা করে।
এছাড়া বিএনপি নেতা আবদুস সামাদের কর্মী সাঈদ রনি, মুরাদ ও মাসুদ। তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, গাড়ী ভাংচুর, পুলিশের উপর হামলা ও পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজেও তাদের দেখা গেছে।
গ্রেফতার মোস্তফা কামাল সুমন ২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন পুলিশের ওপর হামলা করে এক পুলিশ সদস্যের দাঁত ভেঙ্গে ফেলে। এমন কি এই ঘটনার ছবি প্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছেন দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছি। এছাড়াও নিহত পুলিশ সদস্যের শিশু কন্যা “বাবা, বাবা বলে কাঁদছে” এমন এক ফেসবুক পেস্টো গিয়ে কমেন্ট করেছে “উই আর নট আনহ্যাপি”। গ্রেফতারের পর সবকিছু স্বীকার করেছে। এমন কি তার সঙ্গে যারা ছিলো তাদের পরিচয় স্বীকার করেছে।
পৃথক আরেক ঘটনায় গত ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর বংশাল এলাকায় আকাশ পরিবহনে যাত্রীবেশে উঠে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আল আমিন এক বিএনপি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিবি প্রধান বলেন, সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ থেকে গাজীপুর রুটে চলাচল করা আকাশ পরিবহনের একটি গাড়িতে বংশাল থানার নবাব ইউসুফ রোডের ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়ি থামলে যাত্রীবেশে কয়েকজন মিলে গাড়িতে উঠে। পরবর্তীতে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে নেমে যায়। এই ঘটনায় জড়িত আল আমিনকে কেরানীগঞ্জ থানার চুনকটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নাশকতা ও আগুনের ঘটনায় জড়িতরা গ্রেফতারের পর ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। পাশাপাশি তারা বলেছে এই নাশকতা তাদের পূর্ব পরিকল্পিত।