নিজস্ব প্রতিবেদক –
গাজীপুর মহানগরীর নাওজোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের একটি এপিসি কারে বিস্ফোরণ ঘটে। আর এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যের কব্জি উড়ে গেছে। আহত হয়েছেন আরও চারজন।
বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, সফিপুর, চান্দনা চৌরাস্তা ও মৌচাকসহ বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। বুধবার সকালেও আন্দোলন করেছে তারা। এসময় এক নারী শ্রমিক নিহত হয়। এরপর পরিস্থিতি পুরোই স্বাভাবিক ছিল। তবে বিকেলে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সমন্বয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় শ্রমিকরা পিছু হটে। পরে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ভাওয়াল বদলে আলম সরকারি কলেজের সামনের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা। ঠিক এ সময় পুলিশের এপিসি কারে বিস্ফোরণ ঘটে। আহত হন ৫ পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।
জানা গেছে, ওই গাড়ির ভেতর থাকা বিস্ফোরক দ্রব্যের কারণে অসাবধানাবসত বিস্ফোরণ ঘটে। ফুয়াদ (২৮) নামে এক পুলিশ সদস্যের হাতের কব্জি উড়ে যায়।
আহত পুলিশ সদস্যদের নেওয়া হয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে কথা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, প্রবীর (৩০), ফুয়াদ, খোরশেদ (৩০), আশিকুল (২৭) ও বিপুল (২৪) নামে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এদের মধ্যে প্রবীর, ফুয়াদ ও খোরশেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের এ হাসপাতালেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকায় পাঠানোদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অবস্থা ফুয়াদের। তার ডান হাত আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। আঙ্গুলগুলো ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, বুধবার শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে মোট আট পুলিশ সদস্য আহত হন। এর মধ্যে সকালে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন ও বিকেলে নাওজোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা পাঁচজন রয়েছেন। বিকেলে যে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন তারা মূলত শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষ ও এপিসি কারে বিস্ফোরণের শিকার। শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যাচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বলেও তিনি জানান।