1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৩ অপরাহ্ন

চার বছর বিদেশে পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না, ধরা পড়লো পিবিআইয়ের হাতে

  • সময় : বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩
  • ২০০
চার বছর বিদেশে পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না, ধরা পড়লো পিবিআইয়ের হাতে
চার বছর বিদেশে পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না, ধরা পড়লো পিবিআইয়ের হাতে

ডেস্ক রিপোর্ট-

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানার মোল্লাবাড়ি নাসিরকোর্ট এলাকার ব্রুনাই প্রবাসী দেলোয়ার মিজি। ২০১৯ সালে ১৬ই জুন মিতালি লঞ্চে তার দীর্ঘদিনের পরোকীয়া প্রেমিকা লিলুফাকে সুকৌশলে হত্যা করে বিদেশে পালিয়ে যান।

এই ঘটনায় ঢাকা কেরানীগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্তে আসামি শনাক্ত হলেও তাকে গ্রেফতার করতে চার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যা মামলার আসামি দেলোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে বেড়িয়ে আসে গৃহবধূ  লিলুফা হত্যার আসল ঘটনা।

বৃহস্পতিবার ( ১২ অক্টোবর ) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার।

লঞ্চ থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে বনজ কুমার বলেন, ২০১৯ সালের ১৭ ই জুন ঢাকা- চাঁদপুর রুটে চলাচল করা মিতালি -৭ লঞ্চের তৃতীয় তলার ৩০৯ নম্বর কেবিন থেকে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে নিহতের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে নিহতের ভাই মনির হোসেন লাশটি তার বোন লিলুফার বলে নিশ্চিত করেন। লঞ্চের বুকিং রেজিস্টারে নিহতের প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর নামের এক মুদি দোকানির নাম ও মোবাইল নম্বর লেখা ছিলো। নিহত লিলুফার সঙ্গে জাহাঙ্গীরের সখ্যতা থাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাহাঙ্গীরকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন মনির। মামলাটি  থানা পুলিশ এক মাস তদন্ত করে। পরবর্তীতে পিবিআই ঢাকা জেলা স্ব-উদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।

তদন্তে যা পেলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা;

পিবিআই মামলাটির তদন্তে নেমে ঘটনার সময়ে আসামি জাহাঙ্গীরের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। কিন্তু এই ঘটনা মাই তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় নি। তবে নিহত নারীর মোবাইলের কল লিস্টে সন্দেহজনক একটি নাম্বার পাওয়া যায়। তবে সেটিও এক নারীর। এরপর নানা কৌশলে এই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ততদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে পারেন নাম্বারটি ঘাতক দেলোয়ারের স্ত্রীর। এই নাম্বার ব্যবহার করেই তিনি নিহত লিলুফার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। তবে দেলোয়ারের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লিলুফা হত্যার ৯ দিন পর তিনি কাঠ মিস্ত্রী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ব্রুনাই চলে যান। এরপরই ইমিগ্রেশনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দেলোয়ার সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে অপেক্ষা করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। সর্বশেষ গত ২২ অক্টোবর দেশে এসে গ্রেফতার হলেন দেলোয়ার।

দেলোয়ারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বরাত দিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার বলেন, গ্রেফতার শেষে দেলোয়ার হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেন। কিন্তু তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের একটি ভয়েস রেকর্ডে তার সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পেয়ে যান তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর মুখ খুলতে শুরু করেন দেলোয়ার।

পিবিআইকে বলেন, লিলুফা হত্যা মামলায় তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি কেউ জানে না। তবে দেশে আসার আগেই নিজের ভাগ্নের মাধ্যমে লিলুফা হত্যা মামলার খোঁজ খবর নিতে বলে। মামলা শেষ করতে যদি টাকা পয়সাও লাগে সেটার ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে বলে। কিন্তু দেশে আসলে সমস্যা হবে না এমন আশ্বাস পেয়েই  সব্রুনাই থেকে বাংলাদেশে আসেন দেলোয়ার।

পরোকীয়া প্রেম থেকে যে ভাবে হত্যা;

ঘাতক দেলোয়ার মিজি রিমান্ডে শেষে আদালতে হত্যার ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে দেলোয়ার বলেন, ২০১২ সালের লিলুফার বাড়িতে কাঠ মিস্ত্রীর কাজের সুবাদে তার পরিচয় হয়।  লিলুফা স্বামী মৃত মোজাম্মেল হক প্রবাসী ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি মারা যান। বাড়িতে তিনি মেয়েকে নিয়ে একাই থাকতেন। এই সুযোগে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে। দেলোয়ার ২০১৭ সালে  ব্রুনাই যান। প্রবাসে বসেও  ভিডিও কলের মাধ্যমে চলত যোগাযোগ।  ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল ২ মাসের ছুটিতে দেশে আসে দেলোয়ার। দেশে আসার পর সে  লিলুফার সঙ্গে একাধিকবার দেখা সাক্ষাৎ করে। এই সময়ে লিলুফা বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু দেলোয়ার সময়ক্ষেপন করতে থাকলে লিলুফা তার বাড়িতে গিয়ে উঠবে বলে হুমকি দিতে থাকে। এমন কি  দেলোয়ারে বড় মেয়ের বিয়ের আয়োজন গিয়ে সব জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় লিলুফাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ঘাতক প্রেমিক। লিলুফা ১৩ বছরের বড় হওয়ায় দেলোয়ার বিয়েতে আগ্রহী ছিলো না। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১৬ই জুন রাতে বিয়ের জন্য ঢাকায় আসার প্রস্তাব দেয়। দেলোয়ার নিজেকে আড়াল করতে  মিতালি -৭ লঞ্চে প্রতিবেশী মুদির দোকানদার জাহাঙ্গীরের নাম, লিলুফার মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে একটি কেবিন বুকিং দেয়।  লিলুফা হত্যার দায়ভার  জাহাঙ্গীরের উপর চাপাতেই নাম ব্যবহার করে। কারণ নিহত লিলুফা নিয়মিত জাহাঙ্গীরের দোকান থেকে কেনাকাটা করতেন। তাই তার সঙ্গে  সখ্যতার বিষয়টি জানতো দেলোয়ার। পরবর্তীতে ১৬ জুন রাত ১০ টার দিকে চাঁদপুর থেকে মিতালি-৭ লঞ্চের ৩য় ৩০৯ নম্বর কেবিনে ওঠে। লঞ্চ ছাড়ার পর রাত ১২টার দিকে লিলুফাকে ধর্ষণ করে। রাত অনুমান দেড়টার দিকে বিয়ে নিয়ে কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে লিলুফার গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করে। লঞ্চ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে নিহত লিলুফার দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে রাজধানীর গাবতলীতে এক আত্মীয়ের বাসায় যায়। ১৭ তারিখ চাঁদপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে যায়। ঘটনার ৯ দিন পর শ্রমিক ভিসায় বিদেশে চলে যায়

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪