নিয়মিত বিরতিতে নগরপিতাদের একের পর এক সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছে ঢাকা ওয়াসা। উন্মুক্ত স্থানে ময়লা-আবর্জনা রাখার বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের হুশিয়ারির এক সপ্তাহের মাথায় ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে সরব হলেন উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
খাল রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার জন্য প্রতিষ্ঠানটির দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওয়াসার দায়িত্ব কেড়ে নিয়ে সিটি করপোরেশনকে দেয়ার আহ্বান জানান আতিকুল ইসলাম।শনিবার সকালে রাজধানীর কাওলায় সিভিল এভিয়েশন কবরস্থানের পাশে আশকোনা হজক্যাম্প, সিভিল এভিয়েশন অফিসার্স কোয়ার্টার, বনরূটা হাউজিং খননকৃত খালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দাবি তুলেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ঢাকা উত্তরের মেয়র বলেন, ‘খাল আইনগতভাবে ঢাকা জেলা প্রশাসনের অধীনে। আর খালের পানি নির্গমন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হলো ওয়াসার।
আর বকাবকি ও গালি শুনতে হয় আমাদের। এটি হতে পারে না মাননীয় মন্ত্রী।’এসময় ঢাকা ওয়াসার জনবল, ভৌত অবকাঠামো, আনুষঙ্গিক উপকরণসহ খাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনকে দেয়ার দাবি তুলে ঢাকা উত্তরের মেয়র বলেন, ‘ওয়াসার অবকাঠামো আছে, লোকবল আছে। ওয়াসার সব কিছু আছে। কিন্তু তারা কাজ করতে দেরি করে, আর কথা শুনতে হয় আমাদের। তাই আমাদের প্রস্তাব হলো, ওয়াসার ভৌত অবকাঠামো, ওয়াসার সকল লোকবল, যত ধরনের টেকনিক্যাল সাপোর্ট আছে; সেগুলো আমাদেরকে দিন। আমরা কাজ করে দেখিয়ে দিবো।’ ওয়াসার দায়বদ্ধতা কাঠগড়ায় তুলে ঢাকা উত্তরের মেয়র বলেন, ‘আমরা কাজ করতে চাই।
কারণ আমরা জনপ্রতিনিধি। কিন্তু ওয়াসার যারা আছেন, তাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হয় না। জবাব দিতে হয় আমাদের।’ রাজধানীর সব সেবা সংস্থার জবাবদিহিতার দাবি জানিয়ে মেয়র আতিক বলেন, ‘জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জবাবদিহি আমাদের করতে হয়। তাই আমাদের পেছনে যেসব সংস্থা কাজ করছে, তাদেরকেও জবাবদিহিতা করতে হবে। যদি জবাবদিহিতা না করতে পারে, তাহলে তাদের দায়িত্ব আমাদেরকে দিয়ে দিন।’ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন ঢাকা উত্তরের মেয়র।
বলেন, ‘যারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করেন, মেট্রোরেল করেন; তাদের কিন্তু সরকার টাকা দেয় জনগণ যাতে দুর্ভোগে না পড়ে, সেভাবে কাজ করার জন্য। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় উনারা যখন কাজ করেন, উনারা কিন্তু জনগণের দুঃখ দেখেন না। উনারা যখন কাজ শুরু করেন, সকল ড্রেনকে বন্দী করে জলাবদ্ধতা তৈরি করে।’আশকোনা ও কাওলা এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে হজক্যাম্প, সিভিল এভিয়েশন অফিসার্স কোয়ার্টার, বনরূটা হাউজিং খাল খননে ঢাকা ওয়াসা ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন ঢাকা উত্তরের মেয়র। পরে খালটি খননে সিটি করপোরেশনকেই উদ্যোগী হতে হয়।
গত ৩০ মে প্রায় ১.৯০ কিমি দীর্ঘ খালটি খননে যৌথভাবে কাজ শুরু করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ২৭ জুন শেষ হয় খননকাজ।মেয়র আতিক বলেন, আমরা কথায় নয় কাজে বিশ্বাস করি, তার প্রমাণ আজকের এই খাল উদ্বোধন। কাজ শুরুর সময় আমরা বলেছিলাম ২১ দিন সময় প্রয়োজন, বৃষ্টির কারণে অতিরিক্ত ৭দিন সময় লেগেছে।