নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের গত ২১ জুলাই একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে’ মামলা তুলে নিতে, ২ লাখ টাকা চান এসআই! শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করেছেন সাভার মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম।

এক প্রতিবাদ লিপিতে তিনি বলেছেন, আমাকে জড়িয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই সংক্রান্ত ঘটনার মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়েছে আরো দুই মাস আগে। আমি এই নিউজের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, পেশাদারিত্ব রক্ষার স্বার্থে অপ্রতিরোধ্য কাজ করায় অপরাধীদের চক্ষুশুল হয়েছি। যাদের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ অসত্য ও সাজানো।

উক্ত সংবাদে যে তিনজনের বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে তাদের বক্তব্যের পর মামলার বর্তমান অবস্থা প্রতিবেদকের জানার প্রয়োজন ছিল। তাহলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যেত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত সাপেক্ষে সাভার মডেল থানায় দায়ের হওয়া ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর এই মামলা নং ২৭ সংক্রান্ত চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন ২০২৩ সালের ৩১ মে বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তারা বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষই বিষয়টি জানেন। এটি এখন বিজ্ঞ আদালতের এখতিয়ার। এ বিষয়ে তদন্ত দাখিলের দুই মাস পর তাদের কাছে টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

তাছাড়া প্রকাশিত নিউজের মধ্যে গত বুধবার ১৯ জুলাই বিকেল চারটায় আরাপাড়া কামাল রোড শাহজাহানের বাড়িতে আমার উপস্থিতির কথা বলা হয়েছে। তাতে স্পষ্টই আমি প্রতিবেদককে জানিয়েছি একটি মাদক সংক্রান্ত ঘটনার প্রয়োজনে উক্ত এলাকায় ফোর্স সহ যাওয়া হয়েছে তবে তাদের বাড়িতে নয়।

একটি পক্ষ নিজেরাই বাদী এবং বিবাদীকে কব্জায় নিয়ে এমন সাজানো বক্তব্য তৈরি করে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়াচ্ছে। আমি এতে সামাজিক, মানসিক ও দাফতরিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনলাইন প্রতিষ্ঠানটিকে বিষয়টি আরো গভীরভাবে অনুসন্ধান করা উচিত ছিল বলে আমি মনে করছি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত ২১ জুলাই একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদে সাভার মডেল থানার এসআই শহিদুল ইসলামকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। কে বা কারা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এহেন কর্মকান্ডে লিপ্ত। এতে বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এসআই শহিদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ করলে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসবে। যোগদানের পর থেকেই পেশাদারিত্বের সাথে সাভার মডেল থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে আসছেন শহিদুল ইসলাম। সাহসিকতার সাথে আলোচিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সাধারণ মানুষের প্রশংসা কুরিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি ঢাকা জেলা উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাভার সদর ইউনিয়নের সাবেক মহিলা মেম্বার শারমিন হককে মারধরের ঘটনায় তার স্বামী মো. ওবায়দুল হকের দায়ের করা মামলায় ২০২৩ সালের শুক্রবার (২৬ মে) ভোর রাতে চাঁপাইন লালটেক এলাকার বাসা থেকে কথিত সাংবাদিক উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেফতার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেন সাভার মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে ১৯ মে সন্ধ্যায় সাংবাদিক উজ্জ্বল হোসেনের নেতৃত্বে তার বাবা, বড় ভাই, পরিবারের অন্য সদস্যরা সাবেক মহিলা মেম্বার শারমিন হকের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। হাতাহাতির একপর্যায়ে নারী নেত্রী শারমিন হক, স্বামী ওবায়দুল হক ও ছেলে শাহরিয়ার শ্রাবণকে মারধর করে। পরবর্তীতে তারা সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।

উজ্জল হোসেন নিজেকে একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিনিধি এবং একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান পরিচয় দিত। সাবেক মহিলা মেম্বার শারমিনকে মারধরের অভিযোগে মামলার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুক্রবার সকালে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। জামিনে এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ প্রয়োগ এবং তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শহিদুল ইসলামকে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।

মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে মারধরের মামলায় অভিযুক্ত কথিত সাংবাদিক উজ্জ্বল হোসেন সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৩০ জুন বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন সাভার মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম। এরপর থেকেই ওই তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের মৃদু চাপ দিয়ে আসছিলেন উজ্জ্বল।

বা বু ম/ অভিজিৎ রায়