1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষেই দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সংঘটিত হবে-আইন উপদেষ্টা টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৪ আজও তিতুমীর কলেজে শিক্ষার্থীদের  সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর রাজধানির সড়কে মাওলানা সাদ পন্থীদের অবস্থান অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচিত নয়,তাদের ম্যান্ডেট নেই-বিএনপি মহাসচিব নিজেকে বদলানোর কোনো ইচ্ছে নেই-প্রধান উপদেষ্টা ভারতীয় চ্যানেল ‘রিপাবলিক বাংলা’র বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৩তম ব্যাচের ওরিয়েন্টশন অনুষ্ঠিত

শিশু যৌন নিপীড়নের ছবি তৈরি করছে এআই

  • সময় : বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩
  • ১০৮

বিবিসি

শিশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, যৌন হয়রানি বা নির্যাতন করার প্রবণতা আছে—এমন ব্যক্তিরা (পেডোফাইল) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে শিশু যৌন নিপীড়নের উপাদান তৈরি করে বিক্রি করছেন। বিবিসি এমন ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছে।

এআই দিয়ে তৈরি করা শিশুদের এসব ছবি কেউ কেউ প্যাট্রিয়নের মতো মূলধারার কনটেন্ট শেয়ারিং সাইটগুলোতেও গ্রাহক হয়ে দেখতে পারছেন। তবে প্যাট্রিয়ন বলছে, এ ধরনের ছবি প্রকাশের ব্যাপারে তাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি আছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল পুলিশ চিফ কাউন্সিল (এনপিসিসি) বলেছে, এ ঘটনা ক্রমে বেড়ে যাচ্ছে। এতে কিছু কিছু কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম ‘বিপুল লাভ’ করছে। তারা কোনো ‘নৈতিক দায়িত্ব’ নিচ্ছে না।

শিশুদের যৌন নির্যাতনের এসব ছবির নির্মাতারা স্ট্যাবল ডিফিউশন নামে একটি এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন। সফটওয়্যারটির উদ্দেশ্য ছিল গ্রাফিক ডিজাইনে ব্যবহার করা। এআই–চালিত কম্পিউটারে এমন কাজ করা হয়। তবে এ জন্য সাধারণ মানুষেরও বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন হয়।

স্ট্যাবল ডিফিউশন সফটওয়্যারটি ব্যবহারকারীদের কাছে ওয়ার্ড প্রম্পটের মাধ্যমে কেমন ছবি চান, তার বিবরণ নেয়। এরপর এআই প্রোগ্রামটি ওই ছবি তৈরি করে দেয়।
তবে বিবিসি দেখেছে, সফটওয়্যারটি শিশু ও ছোটদের ধর্ষণসহ শিশু যৌন নির্যাতনের মতো ছবি তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

যুক্তরাজ্য পুলিশের অনলাইন শিশু নির্যাতনে তদন্ত দল বলছে, তারা ইতিমধ্যে এ ধরনের বিষয়ের সম্মুখীন হচ্ছেন। ফ্রিল্যান্স গবেষক ও সাংবাদিক অক্টাভিয়া শিপশ্যাঙ্কস কয়েক মাস ধরে এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। তদন্তের ফল তুলে ধরতে তিনি শিশুবিষয়ক দাতব্য সংস্থা এনএসপিসিসির মাধ্যমে বিবিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

অক্টাভিয়া বলেন, যেহেতু এআইয়ের মাধ্যমে ছবি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, তাই এটা খুব ছড়িয়ে পড়েছে…এটা কেবল অল্পবয়সী মেয়ে নয়, তাঁরা (পেডোফাইল) বাচ্চাদের নিয়েও এমন কাজ করছেন।

কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করা ‘ছদ্মচিত্র’, যা শিশু যৌন নির্যাতনকে চিত্রিত করে এবং দেখতে বাস্তব ছবির মতোই—এমন ছবি প্রকাশ ও স্থানান্তর করা যুক্তরাজ্যে অবৈধ।
যুক্তরাজ্যের এনপিসিসির শিশু সুরক্ষায় নেতৃত্বদানকারী ইয়ান ক্রিচলি বলেন, এই যুক্তি দেওয়া ভুল হবে, কারণ এ ধরনের কৃত্রিম ছবিতে কোনো প্রকৃত শিশুকে চিত্রিত করা হয়নি। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, একজন পেডোফাইল চিন্তা থেকে কৃত্রিমভাবে এমন ছবি তৈরি করতে করতে একটি প্রকৃত শিশুর অপব্যবহারের দিকে, আপত্তিকর মাত্রার দিকে যেতে পারেন।

শিশুদের নিয়ে কৃত্রিমভাবে তৈরি করে কেউ কেউ এমন ছবি জাপানের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পিক্সিভে পোস্ট করছেন। তাঁরা মূলত জাপানের জনপ্রিয় কমিক চরিত্র মাঙ্গা ও অ্যানিমেশন অ্যানিমের মাধ্যমে এগুলো ব্যবহার করছেন। পিক্সিভ জাপানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ওই দেশে শিশুদের যৌনতাপূর্ণ কার্টুন আঁকা ও পোস্ট করা বেআইনি নয়। এসব ছবি তৈরির কারিগরেরা তাঁদের কাজের প্রচার চালাতে হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে গ্রুপে শেয়ার করে থাকেন।

পিক্সিভের একজন মুখপাত্র বলেছেন, পিক্সিভ এ সমস্যা সমাধানে ব্যাপক জোর দিয়েছে। গত ৩১ মে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, এটি অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌনসম্পর্কিত বিষয়বস্তুর সব ছবি নিষিদ্ধ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, এটি সক্রিয়ভাবে মনিটরিং সিস্টেমগুলোকে শক্তিশালী করেছে। এআইয়ের কারণে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলায় যথেষ্ট সংস্থানও বরাদ্দ করছে।

অক্টাভিয়া শিপশ্যাঙ্কস বিবিসিকে বলেন, তাঁর গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যবহারকারীরা শিশু নিপীড়নের ছবি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘সংখ্যাটা বিপুল, তাই মানুষ (ছবি নির্মাতা) বলতে পারেন, “প্রতি মাসে কমপক্ষে এক হাজার ছবি তৈরির লক্ষ্য আছে তাঁদের।”’

পিক্সিভে পোস্ট করা ছবিগুলোর নিচে ব্যবহারকারীদের করা মন্তব্য দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় যে তাঁদের শিশুদের প্রতি যৌন আগ্রহ আছে। এমনকি কিছু ব্যবহারকারী এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি করা নয়—শিশুদের এমন প্রকৃত নিপীড়নের ছবি ও ভিডিও প্রকাশেরও প্রস্তাব দিয়েছে। অক্টাভিয়া শিপশ্যাঙ্কস এই প্ল্যাটফর্মের এমন কিছু গ্রুপের ওপর নজরদারি করছেন।

শিশু যৌন নিপীড়নের ছবির বাণিজ্যিক ব্যবহার

পিক্সিভে অনেক ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে লিংক দেওয়া থাকে। এতে ‘সেন্সরহীন কনটেন্ট’ থাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কনটেন্ট শেয়ারিং সাইট প্যাট্রিয়ন জানিয়েছে।
প্যাট্রিয়নের বর্তমান মূল্য প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। এর প্রায় আড়াই লাখেরও বেশি কনটেন্ট ক্রিয়েটর আছে বলে দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে সুপরিচিত সেলিব্রিটি, সাংবাদিক ও লেখকদের বৈধ অ্যাকাউন্ট আছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ব্লগ, পডকাস্ট, ভিডিও ও ছবি দেখার জন্য অনুসারীদের সাবস্ক্রিপশন করতে হয়। এর জন্য তাঁদের প্রতি মাসে ৩ দশমিক ৮৫ ডলারের মতো অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

তবে তদন্তে দেখা গেছে, প্যাট্রিয়নের অ্যাকাউন্টগুলোয় এআইয়ের তৈরি শিশুদের আপত্তিকর ছবি বিক্রির প্রস্তাব দেওয়া হয়। ক্রেতার উপাদানের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে এসব ছবির নানা দাম নির্ধারণ করা হয়।

একজন ব্যবহারকারী তাঁর অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, মাসে ৮ দশমিক ৩০ ডলারের বিনিময়ে তিনি সেন্সরহীন ছবি বিক্রি করবেন।

বিবিসি প্যাট্রিয়নের কাছে এমন একটি অ্যাকাউন্টের উদাহরণ পাঠিয়েছে। এর জবাবে প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিত করেছে, অ্যাকাউন্টটি প্যাট্রিয়নের নীতি লঙ্ঘন করেছে। দ্রুত অ্যাকাউন্টটি সরিয়ে ফেলা হবে।

প্যাট্রিয়ন বলেছে, ইন্টারনেটে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি করা ক্ষতিকারক কনটেন্ট শেয়ার বাড়ছে। তারা এ ধরনের কনটেন্ট চিহ্নিত করে সরিয়ে দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ‘আমরা ইতিমধ্যে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি করা কৃত্রিম শিশু নিপীড়নের কনটেন্ট নিষিদ্ধ করেছি। শিশু-কিশোরদের নিরাপদ রাখতে আমাদের টিম কাজ করছে।’

স্ট্যাবিলিটি এআই বিবিসিকে জানিয়েছে, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মে অবৈধ বা অনৈতিক উদ্দেশ্যে যে কোনো অপব্যবহার নিষিদ্ধ। আমাদের নীতির মধ্যে শিশু যৌন নির্যাতনের উপাদানও নিষিদ্ধ করা আছে। আমরা দৃঢ়ভাবে এমন ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি।’

বিশ্বে দ্রুত এআইয়ের বিকাশ ঘটছে। এ কারণে মানুষের গোপনীয়তা, মানবাধিকার বা নিরাপত্তায় ভবিষ্যতের ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪